তোমায় আমি কিসের সাথে তুলনা করবো বলো?
তোমার চুলের ঘ্রাণে লুকিয়ে আছে গোপন কোনো চন্দন-বন,
যেখানে বসন্ত এসে থামে নিঃশব্দে,
পৃথিবীর কোনো নেশাদ্রব্যে এমন মোহিনী বিভা কি জাগে?
তোমার চুলে জড়িয়ে আছে অন্ধকার রাতের রহস্য,
যা ছুঁয়ে গেলে মনে হয়—
তারকারাজি পথ হারিয়ে তাতে লুকিয়ে গেছে।
তোমার চোখ? ওহ, সে তো এক গভীর নিঝুম বনের মতো—
যেখানে সব হারানো পথিক আশ্রয় খুঁজে পায়।
তার গভীরতায় চলে আলো আর অন্ধকারের এক নৃত্য,
যেখানে জাগে জীবন, আবার মরে যায় অনায়াসে।
এমন শান্ত অথচ দুরন্ত এক মহাসাগর কি
কোনো সৃষ্টির ইতিহাসে লেখা আছে?
তোমার হাসি যেন বজ্র-নিভানো প্রভাতের প্রথম সূর্যালোক,
যা অন্ধকারের বুক চিরে ঘোষণা দেয়—
'আলো এসেছে, জীবন এসেছে!'
তোমার হাসি এক অমৃতসন্ধান,
যা শত ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়,
যা পাথরকেও কোমল করে তোলে।
তোমার কণ্ঠস্বর যেন ঋতুর প্রথম বর্ষা,
যার প্রতিটি শব্দ ঝরে পড়ে গান হয়ে।
তা যেন বাউলের বাঁশির মতো,
যার সুরে জেগে ওঠে মৃত নদী,
ঝরতে থাকে তার শুষ্ক তীর।
তোমার কথা শুনলে মনে হয়,
জীবন নিজেই মাধুর্যের অর্থ খুঁজে পেয়েছে।
তোমার রূপের তুলনা আমি কোথায় খুঁজব?
তুমি কি নক্ষত্রদের মতো দূরের কোনো আলো?
না, তারা তো একাকীত্বের মশাল—
আর তুমি? তুমি হলে এক চিরন্তন আলোকধারা,
যা ছুঁয়ে যায় অন্তরের সমস্ত কালো,
তুমি হলে রক্তগোলাপ—
যার প্রতিটি পাঁপড়িতে লেখা আছে আগুনের কবিতা।
তুমি কেবল রূপ নও, তুমি সুর, তুমি বিদ্রোহের মন্ত্র,
তুমি প্রেমের পবিত্র আগুন, যা কখনো নিভে যায় না।
তুমি আমার চিন্তা, তুমি আমার উপাসনা,
তুমি সেই কবিতা,
যা যুগের পর যুগ বেঁচে থাকবে অসীম সৌন্দর্যের আরাধনা হয়ে।