তোমার খোলা চুলের গন্ধে আমি পেতাম মহাকালের ইঙ্গিত,
যেন কাঠগোলাপের পাপড়ির ভাঁজে লুকিয়ে ছিল
সময়ের অলিখিত কোনো কবিতা।
তুমি ছিলে এক মহীরুহ,
আর আমি—তোমার ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকা নির্বাক পথিক।

তোমার নীল চুড়ির ঝংকারে নদীর স্রোত স্তব্ধ হয়েছিল একদিন।
আজও সেই ঢেউয়ের প্রতিধ্বনি শুনি আমি,
যেন অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া চাঁদের আর্তনাদ।
তুমি চলে গেছ,
কিন্তু তোমার ছুঁয়ে যাওয়া বাতাস বয়ে যায়
আমার শিরায় শিরায়।

জীবন কী?
তোমার চোখে দেখেছিলাম একবার,
তারপর সেই দৃষ্টি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি চিরদিন।
আমার হাতের রেখায় তোমার নাম আঁকা ছিল কি?
নাকি স্রেফ এক ভুল পাণ্ডুলিপি,
যা মহাকাল নিজেই ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিল নদীর স্রোতে?

তোমার প্রিয় কাঠগোলাপের ডাল এখন আর নুয়ে পড়ে না,
তার গন্ধ মিশে গেছে রাত্রির গভীরে।
আমি হাঁটছি সেই উপত্যকায়,
যেখানে স্মৃতি আর সময়ের ফাঁকে পড়ে থাকে
একটি নীল চুড়ি—
আর তার কাঁচ ভাঙা টুকরোয়
আমি প্রতিদিন নতুন করে হারাই।

তুমি ছিলে আমার জীবনের অনন্ত প্রশ্ন,
আর আমি—তোমার উত্তর খুঁজতে থাকা এক উন্মাদ,
যার প্রতিটি কবিতা থেমে যায়
তোমার স্মৃতির আগুনে পুড়ে।
তুমি নেই, কিন্তু তুমি আছো—
চিরকালীন, এক অনিঃশেষ কবিতার মতো।