মরণ যখন জীবন জাগন
সে মরণে কার গো বারণ!
আপন প্রাণের ত্যাগের আভায়
লক্ষ প্রাণে যদি সে জাগায়-
বিশ্ব প্রেমের শিখা অনির্বাণ
সেই তো শহীদ, সেই তো মহান ।
আরে! ছুড়্বি ছোড়্ বুলেট টিয়ার!
আমরা করি থোড়াই কেয়ার!!
আমার মায়ের আদর আঁচল
যার কাছে তোর গ্রেনেড অচল;
আমার মায়ের মাটির কবর
সে যে গড়া মোর বুকের ওপর!
নেই কি প্রেম বুকের মাঝে?
পেয়েছিস্ যা মায়ের কাছে-
চাঁদনী রাতে গল্প শোনার ছলে!
আরে, মায়ের নদীর রূপালী রঙ্গা জলে!
ডাক্ছে মা মোর বেহেস্ত্ থেকে-
কোন সে শক্তি আমায় রুখে?
সেই আঁচলের নিবিড় ছোঁয়ায়-
এই ফাগুনী উষ্ণ হাওয়ায়
মেল না রফিক আপন বুক;
সেই মরনেই মায়ের সুখ।
আরে! ছুড়্বি ছোড়্ বুলেট টিয়ার!
আমরা করি থোড়াই কেয়ার!!
আমার বাবার স্নেহের হাসি-
বুঝ্বি কি দাম ভিন্ন ভাষী।
আমার বাবা বাউল গানে
কি দোল দোলে অলখ পানে-
কি সুখ আনে দোয়েল সুরে-
গ্রাম থেকে গ্রাম গ্রামান্তরে।
লাঙ্গল কাঁধে কাস্তে হাতে
গ্রাম পেরিয়ে ফসল ক্ষেতে
কি সে জাদু দেখান তিনি
নক্শী মাঠে মোহর বুনি।
সেই জাদুরই মোহাবেশে
ভাষা হারা আপন দেশে
আন্ না ভাষা ফাগুন রণে-
সালাম রে তুই আপন খুনে।
আরে! ছুড়্বি ছোড়্ বুলেট টিয়ার!
আমরা করি থোড়াই কেয়ার!!
আমার ভাইয়ের শ্রমের প্রসাদ-
গ্রাম বাংলার অতুল প্রাসাদ!
আমার ভাইয়ের ঘামে গড়া-
দেশটি মোদের সোনার বাড়া।
মাতৃভাষার অশেষ খনি
তার গুনেই তো আমরা চিনি।
আমার ভাইয়ের মুক্তি শ্লোগান
“আপন বুকে বুলেট ঠেকান”।
সেই তো আমার পথের নেতা
হানাদার তুই বুঝবি কি তা।
ওরে জব্বার মিছে দিনগুজার
চাই না আর। ভাঙ্গরে এবার
ধর্ম মিলের আজব ইস্যু,
মুছতে ভাইয়ের নয়ন আঁশু।
আরে! ছুড়্বি ছোড়্ বুলেট টিয়ার!
আমরা করি থোড়াই কেয়ার!!
আমার প্রিয়ার বাসর চুমি
হাজার গুলির চাইতে দামী!
আমার প্রিয়ার মায়াবী সে মুখ
সাহসে আমার ভরালো এ বুক।
মোর অণিমার ডাগর দু’চোখ
বুঝালো আমায় ভাষার শোক;
মেহেদী রাঙ্গানো তার সে দু’হাত
সঙ্গী করালো এই রাজপথ।
নুপুর সাজানো আলতা রাঙ্গান
সেই পা তো মোর শ্রেষ্ঠ শ্লোগান।
সেই সে বুকের কোমল ছোঁয়া
ভুলালো মোরে নাওয়া খাওয়া।
তার মিলনেই যদি এ গুলি
বরকত মেলে দে না খুলি!
একুশ দীপের অমল নাশে-
জ্বলা যে আগ্ নিত্য হাসে,
সকল বাঙ্গাল কৃষক মাঝে;
সেই সে আগের শুভ্র তেজে
জ্বলে উঠুক প্রবীণ নবীন-
সোনার বাংলায় আনতে সুদিন!