কুঝিকঝিক শব্দ তুলে ছুটে যায় মাঝরাতের ট্রেন।
জানালা খুলে দিতেই একরাশ অন্ধকার প্রবেশ করে কামরায়।
অন্ধকার ঘুরে বেড়ায় প্রায় খালি কামরা জুড়ে ইতস্ততভাবে।
জানালা নামিয়ে অন্ধকার আটকে ফেলা যাবে হয়ত ভেবেই-
সহযাত্রী কেউ খড়খড় শব্দে বদ্ধ কামরা তৈরি করে ফেলে।
মানুষের ভয়ে অন্ধকার এক কোণায় গুটিসুটি মেরে লুকায়।
অন্ধকার লুকিয়ে যেতেই তীব্র আলোয় ঝলসে ওঠে কামরা।
চোখ ধাঁধানো আলো সয়ে যেতে যেতে বেশ সময় লাগে,
ততক্ষণে আবিষ্কার হল মানুষগুলোর হাতে রক্ত লেগে আছে।
ছোপ ছোপ নিকষ কালো রক্তের দাগ ছড়িয়ে যাচ্ছে,
মহামারির মত হাত থেকে হাতে, মানুষ থেকে মানুষে।
আলোর ঔজ্জ্বল্য অসহ্য লাগতে থাকে সবার ভীষণ,
আবারও জানালা খুলে অন্ধকারকে প্রবেশের আমন্ত্রণ,
অন্ধকার মানুষের ভয়েই ভীত হয়ে আর আমন্ত্রণ রাখে না।
জানালার বাইরেই বিস্ফোরিত ভয়ার্ত চোখে দেখে যায়-
রক্তের উল্কি আঁকা মানুষের ভেতরের কৃষ্ণগহ্বর,
তারই মাঝে হারিয়ে যায় মানুষ, অমানুষ হয়ে আসে।
ঝিকঝিক শব্দ তুলে ছুটে চলে মাঝরাতের ট্রেন।
গাঢ় কুয়াশার চাদর চিড়ে অনন্ত অন্তিম যাত্রায়,
অসহ্য আলো থেকে ভয়ার্ত আঁধারে হারাবার যাত্রায়,
সে যাত্রায় ছুটে চলি, প্রায় খালি কামরায়, আরো একবার।

-মিনহাজ উদ্দিন শিবলী
১৭/০১/২০১৮