একুশ ছিলো মনের ভাষা প্রকাশের আন্দোলন,
সালাম বরকত রফিক জব্বার, আরও-
নাম না জানা কত শহীদের রক্ত ছিলো তার দ্বার।
দেখো শহীদেরা, তোমাদের সাথীরা-
আজও দেশের জন্য অপমানে অপবাদে জর্জরিত,
তাদের কন্ঠ স্তব্ধ, কারাগারে তারা অসহায় নির্যাতিত,
হয়তো তোমাদের বিদেহী আত্মা কাঁদছে।
দেখো বাংলার স্বাধীনতা অরক্ষিত,
মনের ভাব প্রকাশের ভাষা শৃঙখলিত,
তোমাদের আত্মা আজ কি বলবে ?
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চেয়েছিলে কি এ জন্য ?
দেখো এযুগের ঘষেটি ও নব্য মীরজাফরেরা-
তোমাদের উত্তরসূরীদের বাঁচতে দিতে চাইছেনা,
শত শত বুলেট তাদের বুক ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে।
হে শহীদেরা, যারা এদেশে থেকেও-
অন্তরে লালন করে বিজাতীয়তা,
সেই মীরজাফর জগতশেঠদের প্রেতাত্তারা-
বাংলার মানচিত্র প্রভূদের কাছে বিক্রি করে দিতে চায়,
আমারা জীবিত থাকতে তা হতে দেবনা।
হে বাংলার বীর শহীদেরা,
ক্ষমতার মসনদ পাঁকা করতে যখন দেখি-
শহীদ মিনার আর তোমাদের সমাধি বাজিকরদের হাতে,
তখন আমার আত্মা কেঁদে উঠে-
জনতার ঢল নামে তবুও আমি যাইনি শহীদ চত্তরে,
পুষ্প স্তবক রাখিনি শহীদ বেদীতে,
পুষ্প মাল্য পড়াইনি প্রতিকী শহীদদের,
আমার কাছে মনে হয় এসব লোক দেখানো ভন্ডামী।
মনে করি তোমাদের বিদেহী আত্মা কষ্ট পাবে।
তবে আমি সেই সমাধিতে নিত্য যাই,
যা সর্বদা আমার হৃদয় মন্দিরে স্হাস্পিত।
আমি আজ অসহায় বিষন্ন মনে তাকিয়ে দেখি বাংলার রূপ,
যে জমিন তোমাদের প্রতি ফোটা রক্তে উর্বর,
যে জমিন শত শত মা বোনের সম্ভ্রমের প্রতিদান,
সে জমিন আজ শোষক হায়নাদের বদ্ধভূমি,
সে জমিন আজও ধর্ষকদের লীলা ক্ষেত্রে,
সে জমিন আজও চাঁদাবাজ মাস্তনদের অভয়ারন্য।
জাতীর হে বীর সৈনিকেরা,
দেখো তোমাদের সন্তানেরা আজ শ্বাস নিতে পারছেনা-
তোমাদের রক্তে অর্জিত মাতৃভূমিতে।
যদি তোমরাও আজ বেঁচে থাকতে,
হয়তো কারাগার হতো তোমাদের উত্তম স্হান।
নয়তো বাংলার রাজপথে রিকশা অথবা ভেন চালিয়ে,
তোমাদের দিনাতিপাত চলতে হতো।
তখন হাজারও মুক্তিযোদ্ধা আর বিরাঙ্গনাদের মতো-
তোমরাও বলতে রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষা এনেছি,
যুদ্ধকরে দেশ স্বাধীন করেছি বটে, কিন্তু আমরা পেয়েছি কি ?