নাগরিক কোলাহল থেকে পালিয়ে মন
স্নিগ্ধ পাখির মুখরিত গ্রামে ফিরতে ব্যাকুল  
আগের মত হয়তো পাবো না মেঠো পথ।
পিচ ঢালা পথের মাঝে ডুপ্লেক্স বাড়ি দেয় উঁকি
প্রযুক্তির কল্যাণে শহুরে আমেজ আজ!

ফজরের পরে ছেলেমেয়েরা যায় দল মক্তবে
বিকালে স্কুলের শেষে খেলায় মেতে উঠে
দূর আকাশে ঘুড়ি গুলো ওড়াচ্ছে আপন মনে!
অলস সময় পার করে লোকজন গ্রামের হাট বাজারে
সন্ধ্যা শেষে পরদিন কেউ যায় কাজে মাঠে বা শহরে!

তারপরও মন আমার ফিরে যেতে চায় গ্রামে
যেখানে কুয়াশা চাদর ঢেকেছে প্রান্তর
শিশির ভেজা মুক্ত সবুজের উপর একান্ত।
খুব ইচ্ছে করে লজ্জাবতীর সাথে খেলতে
ঝলমল রোদের বন্যায় ডুবে থাকতে!

নবান্নের ধানক্ষেতের মিষ্টি গন্ধ সাথে পিঠা নাড়ু
খেজুরের রস তৃপ্তি ও শীতের সতেজ সবজি
সরিষা ও সূর্যমুখী ক্ষেতে এর হলুদের আস্ফলন!
মৌমাছির মৌ মৌ ও রঙিন প্রজাপতি ডানা মেলে চলা
এইসবে আমার চোখ জুড়িয়ে বিলীন অবসাদ।

বাদল দিনের মেঘের বর্ষণ নদী জলাশয়ে
শাপলা ও পদ্ম পানিতে শিরদাঁড়া করে
কচুরিপানার বেগুনি ফুল আঁকড়ে আমার মন,
নদী ধানক্ষেত জলাশয় মাছ ধরার দৃশ্যে অভিভূত
মায়ের রান্নার মাছের ঝোল, উঠানের শাক পাতা অমৃত!

ঝিঝি পোকা ও জোনাকির আলোয় আমি উদ্ভাসিত
আমাবস্যায় পথের ধারে বাঁশ ঝাড়ের হেঁটে যাই
সামনে কবরস্থান আমি শিহরিত পূর্বপুরুষ মাটিতে,
ভয় না শ্রদ্ধার অনুভূতি বুঝতে পারেনি আজ অবধি!
স্নিগ্ধ জ্যোৎস্না আলো স্তব্ধ রাত বড্ড ভালোবাসি।

নাগরিক যান্ত্রিক যন্ত্রণায় আমি আজ ক্লান্ত
গ্রাম্য রাজনীতি আর পরনিন্দায় এগুলোই অপছন্দ
একান্নবর্তী আত্মীয়র পরিবারগুলো হচ্ছে ভিন্ন-
সমাজে এখনো বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা আছে কিছু অবশিষ্ট
তারপরও গ্রাম ভালোবাসি যে শিকড়ে অঙ্কুরিত!