সত্যিই তো-
পৃথিবীতে নিজের বলে নেই কিছু।
তোমার যত সাধের অর্জন,
উত্তরাধিকারেরা দাঁড়ায় পিছু!
এই যে রক্ত-মাংসের দেহ,
সে কি তোমার? কী বলো মনে?
শোধাবে ঋণ একদিন তুমি,
মাটি বা বাতাসে দেহ দানে।
তবে কি এলে শুধু মাটির টানে?
কী ভাবছো তুমি বসে?
জন্মটাই বুঝি বৃথা হলো?
কী ক্ষতি এভাবে দিন কাটালে অনায়াসে?
এই যে আকাশ, এই যে বাতাস,
পাহাড়, সমুদ্র, তারার দ্যুতি,
সবাই তো চলে নিজ পথে,
প্রকৃতি রাখে নিয়মের গতি।
গাছ দেয় ছায়া, ফল আর ফুল,
নদী বইছে তার আপন ধারায়,
সূর্য দেয় আলো, চাঁদ স্নিগ্ধতা,
প্রকৃতি সাজে অপরূপ মায়ায়।
দিন যায়, রাত নামে,
বৃষ্টি আসে, গ্রীষ্ম ফিরে,
পৃথিবী কাঁপে, আবার জেগে ওঠে,
প্রকৃতি তার ছন্দ ধরে।
তুমি কি শুধু নীরব দর্শক?
বয়ে বেড়াবে অলীক ভার?
নাকি জ্বালাবে আলো মানবতায়?
দেবে বিসর্জন রিপুর অহংকার?
ধরনী যদি না ফলাতো শস্য,
তবে কোথায় পেতে খাদ্য?
অথবা বৃক্ষ যদি পেত ব্যথা,
সে-ও কিন্তু ভাবনার প্রতিপাদ্য।
ছোট-বড় যত প্রাণীকুল,
বিচরণ করে এই ধরনীতে,
তারা যদি হতো বিবেকহীন,
যুদ্ধ হতো প্রতিদিন প্রতিরাতে!
সময়ের হাতে বাঁধা জীবন,
ক্ষণিকের এই রঙিন পথে,
তবে কেন এত অস্থিরতা?
কেন আরোহন অনৈতিক রথে?
ছাড়বে যদি একদিন ধরনী,
কেন গড়বে কলঙ্কিত ইতিহাস?
তোমার পদচিহ্ন, তোমার কর্মে,
হয়না যেন জগতের সর্বনাশ?
তাই জেগে ওঠো, আলোকিত হও,
তোমার অস্তিত্ব ছড়াক শুভ্র আলো,
পদচিহ্ন রেখে যাও মানবতায়,
কালের আয়নায় কর্ম হোক ভালো।
মানুষ রবে তার কর্মে অমর,
সময়ের স্রোতে যাবে সব মিলিয়ে,
তাই দুঃখ ভুলে হাসিতে জাগো,
বিবেকের আলো আপন প্রাণে জ্বালিয়ে।
আকাশ ছুঁতে হলে জানতে হয়,
পায়ের নিচে মাটি আছে,
মানবতা যদি ভুলো তুমি,
পথ হারাবে কুয়াশার মাঝে।
স্বপ্ন দেখো, চলো এগিয়ে,
মানুষের পাশে দাঁড়াও নির্ভয়ে,
ভালোবাসা ছড়িয়ে দাও,
সুবাস যেন ছুঁয়ে যায় হৃদয়ে।
লোভ-হিংসার জাল ভেঙে,
সত্যের পথে চলতে শেখো,
সাহস থাকুক হৃদয়জুড়ে,
ন্যায়ের পতাকা উড়াতে শিখো।
তোমার হাতেই আগামীর দিন,
আলো বা আঁধার গড়ার পালা,
সুকর্ম যদি রেখে যাও ভবে,
বৈতরণী পারের মিলবে ভেলা।
এ ধরনী তার ঋণ শোধ করে,
যে জন দেয় ভালোবাসা,
তুমি যদি দাও স্নিগ্ধ ছোঁয়া,
জগৎ দেবে আশীর্বাদ খাসা।
তাই আসো, এই পথ চলায়,
অশান্তির মূলোৎপাটন করে,
মানবতার বীজ রোপণ করি,
শান্তি আসুক পৃথিবী জুড়ে।