শুধু তোমার আশায়,
শুধু তোমার আশায় রোজ গিয়েছে ডাকঘরের সামনে একটি ছোট্ট চিঠির খোজে, কিন্ত চিঠিও যে এখন তোমার মতো দুষ্কর তা  আমার বোধগম্য ছিল না।

শুধু তোমার আশায়,
বাড়ির ছাদে উড়ে আসা ঐ আগন্তুক টিয়া পাখিকে খাওয়াতাম রোজ আর বলতাম "ওহে টিয়া তুমি বইলো তারে গিয়া আমি সারাক্ষণ ভাবি যে তারে নিয়া " কিন্তু টিয়া তো আর আমি না যে শত অবহেলার পরও সারাক্ষণ তোমার কথা ভাববে। সে চলে যেত তার গন্তব্যে।

শুধু তোমার আশায়,
তাকিয়ে থাকতাম ঐ ঢেউ খেলানো নদীর দিকে যদি কখনো হ্যলোসিনেশন এর কারণে তোমার মুখটা ভেসে ওঠে নদীর বুকে তাহলে যে আমার শত সহস্র যুগ ধরে তোমায় দেখার ইচ্ছা পূরণ হবে।

শুধু তোমার আশায়, মন দিয়ে শুনতাম সেসব কথা যেখানে প্রসঙ্গ ছিলে তুমি কারণ তোমার কথা চিন্তা করলে যে আমার হৃদয় শ্রান্ত হয়,মিটে যায় সকল ক্লান্তি।

শুধু তোমার আশায়,
প্রতিদিন ভোর বেলা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তাকিয়ে থাকতাম ঐ সদ্য আগত বাসের দরজাটার দিকে শুধু একটি কথা ভেবে যে আজ হয়তো তুমি আসবে, হয়তো আজ আমার শত সহস্র যুগ ধরে তোমাকে দেখার আশা পূরণ হবে।

শুধু তোমার আশায়,
রাত্রের সাথে অভিমান করেছি বহু বার, সখ্যতা ভেঙেছি তার আর আমার সে যে তোমার চিন্তার সাথে আমার কথপোকথনকে বার বার বাধা দিচ্ছিল ঘুম নামক ঔষধ দ্বারা যা মানুষের  মস্তিষ্ককে মৃত করে দেয় খানিক সময়ের জন্য।

শুধু তোমার আশায়,
বর্ষার মুষলধারে বৃষ্টির সাথে মিশিয়ে নিতাম নিজেকে কারন বৃষ্টির প্রত্যেকটি কণায় আমি অনুভব করতাম তোমায়। আমি ঐ ঝুমঝুম শব্দে তোমার পায়ের নুপুরের আওয়াজ অনুভব করতাম।

শুধু তোমার আশায়,
ফাগুনের ঐ প্রান দোলানো বাতাসে নিজেকে মিশিয়েছি বহুবার, তার মধ্যে আবিষ্কার করতে চেয়েছি তোমার ঐ ঘন কালো কেশের ঘ্রাণ।

শুধু তোমার আশায়,
বসন্তের ঐ কোকিলের আওয়াজ যতটা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি তা যদি আমার শ্রেণি কক্ষে দিতাম তবে হয়তো আজ কিছু একটা হতো,আমি যে বারে বারে ঐ কোকিলের আওয়াজ এর মধ্যে তোমার কন্ঠস্বরকে খুঁজে পাই।

শুধু তোমার আশায়,
শত বার তোমার চলার পথের ঐ বট গাছটিকে বলেছি যদি কখনো কোনো নীলাঞ্জনাকে দেখে তবে তাকে তীব্র গরমে ছায়া দিতে যেন কৃপণতা না করে। কারন সে নীলাঞ্জনা যে আমার একান্ত প্রিয় মানুষ।

এতো আশার পরেও শুধু হৃদয়জুরে আক্ষেপ  রয়ে গেল কারন সবাই বুঝলেও নীলাঞ্জনা আমায় আজও বুঝলো না........