আমার বয়স যখন পাঁচ - মেয়ের শরীর হয়নি তখনো ;
কিন্তু আমি যে মেয়ে মানুষ আর - মেয়ে মানুষ মানেই বিলাসিতার নরম - লাবণ্যময়ী মাংস।
আমি যাকে মামা বলে ডাকতাম; তার কাছেই আমার প্রথম চকলেটের লোভের বিনিময়ে - জোর করে হয় বস্ত্রহরণ । চিৎকার দিয়ে বার বার বলেছি - মামা ছেড়ে দাও আমাকে - ব্যথা লাগছে - কষ্ট হচ্ছে - ছেড়ে দাও; সেদিন মনে মনে একটি কথা ভেসে বেড়াচ্ছিল মামা অনেক পঁচা! খুব পঁচা; মামার সাথে আর কথা কোনোদিনও বলবো না - আজ থেকে আড়ি। আমার কান্না সেদিন কারো কাছেই পৌঁছাতে পারেনি, কেউ শুনেনি এই ছোট্ট মনের আকুতি মিনতি গুলো, সেদিন বোধগম্য ছিলো না যৌনতার।
তখনো আমার দুটো ফুল ফুটেনি;
আমার গঙ্গা, যমুনা,সরস্বতী নদীতে জোয়ার আসেনি -
আমার ত্রিবেণীর ঘাট জলশুন্য জলশয়।
আমার বয়স যখন এগারো – সম্ভু দাদার বয়স তখন আঠারো ; মধুর কন্ঠে বলতে লাগলো পুঁচকি এদিকে আয় – শুনে যা! পুঁচকি! এই পুঁচকি - ভোঁদৌড়ে সম্ভুদা -সম্ভুদা – সম্ভুদা – মুখে একগাল হাসি নিয়ে ছুটলাম তার কাছে। কিন্তু সম্ভুদা আমার মুখ চেপে- সেই প্রবাহমান নদী – গঙ্গা,যমুনা,সরস্বতীতে হাত দিলো –
সরিয়ে ফেলতে লাগলো সব আবারণ ;
শুকনো-খরা – চৌচির- ত্রিবেণীর ঘাট তছনছ করে দিলো।
যে হাত দিয়ে দেহের প্রত্যেকটি স্থান – স্পর্শ করলো
কিন্তু আবারনে আবৃত না করেই – ফেলে চলে গেলো;
আমার নিস্তেজ – নিথর দেহ পড়ে রইল ঘন্টাখানেক।
এতো বড়সড় তছনছ করার পরও – সম্ভুদার মুখে কোনো প্রায়শ্চিতবোধ ছিলো না।
সেদিনও আমি অক্ষম – শক্তিহীন – প্রতিবাদহীন – নির্বিকার – নির্বিরোধ ছিলাম।
সেদিনই শেষবারের মতো অনেক কেঁদেছিলাম-
সম্ভুদার মিষ্ট সেই ডাকটা এখনো – কানে বাজে;
এখন পুরুষের মধুর কন্ঠ শুনলে এখন নোনতা - নোনতা লাগে - সেই সুরেলা কন্ঠ এখন আমাকে আর কাদায় না।
আজ আমি পতিতালয় থেকে এক পতিতা বলছি,
তোদের কর্ণধারে যাচ্ছে কি আমার প্রতিধ্বনি?
আমাদের দেখলে নাকি তোদের মাথা লজ্জায় কাটা পড়ে - এই মুখ পোড়া সমাজে;
কিন্তু আঁধার রাতে আমাকেই জড়িয়ে ধরিস তোরা |
তবুও কেনো তোরা নিষ্পাপ মেয়ে গুলোকে নষ্ট করিস?
আমাদের কে দু'মুঠো ভাত দে তোদের পৌরত্ব জাগাবো, আমরা খেয়ে বাঁচি আর তোরা কামরসে ডুবে থাক তবুও ছেড়ে দে নিষ্পাপ মেয়ে গুলো কে ;
তোদের ঐ মুখপোড়া সমাজে আমাদের কথা শুনলে নাক সিঁটকিয়ে উঠে, জোর গলায় বলিস পতিতারা সমাজের অভিশাপ!
কিন্তু আমি বলি না! না! না! পতিতারা সমাজের আর্শীবাদ।
ঐ যে দেখা যাচ্ছে স্কুল ড্রেস পড়া নিষ্পাপ মেয়েটি,
ও আমার মেয়ে, মেয়েটির স্বপ্ন আকাশ ছোয়া,
ছেড়ে দে আমার ঐ নিষ্পাপ মেয়েটিকে, প্রাঞ্জল হাসি দিয়ে হিংস্র রক্তচোষার ভোগবিলাসীর খাদ্য হবো।
৩২১ নাম্বার বাসে উঠেছে আমার বোন -
নতুন ঘরবাঁধা স্বপ্ন বুনবে বলে;
ছেড়ে দে আমার ঐ নিষ্পাপ বোনকে -
আমার উত্তাপ্ত দেহের মাংসপিন্ডের নগ্ন স্বাদে মগ্ন থাক।
শাড়ী পড়ে আছে আমার ভাইয়ের বউ,
তাদের ঘরে জন্ম নিয়েছে একটি ফুটফুটে শিশু,
ওরে সর্বগ্রাসীরা ছেড়ে দে- সে তো অবোধ শিশুটির মা।
ধারালো ব্লেড দিয়ে কেটে দিস না - মেয়ে শিশুটির যৌনাঙ্গ ;
ও তো দুনিয়ার সবে মাত্র পা রেখেছে তাকে বাঁচতে দে,
আমার নগ্নতার আঁচড়ে দাগ বসিয়ে দে বীর্যস্থলনের অগ্নিযোগে।
কোমলপ্রাণের দূরন্ত ছেলে আমার –
শৈশব থেকে কৈশোর দিবে পাড়ি;
ওরে নরপিশাচেরা ছেড়ে দে – সে তো ছেলেমানুষ
তোরা আমার উষ্ণ নাভীতে পড়ে থাক -
তবুও ছেড়েদে মাসুম ছেলেটাকে।
মর্গে এসেছে নিথর দেহের শীতল মেয়ে মানুষের লাশ
ওরে ছেড়ে দে সে তো মৃত একটি লাশ – কেন করিস যৌন ক্ষুধার তল্লাশ ?
আমার উত্তপ্ত শরীরের জ্বালাময়ী ফুল দুটোকে নষ্ট করে দে - তবুও ছেড়ে দে – নেক্রাফাইল সুশীল সমাজ।
আমাদের কে দু'মুঠো ভাত দে তোদের পৌরত্ব জাগাবো, আমরা খেয়ে বাঁচি আর তোরা কামরসে ডুবে থাক, তবুও ছেড়ে দে নিষ্পাপ মেয়ে গুলো কে,
লালসার চাদরে আমার লজ্জা ঢেকে গেছে নিমিত্তে,
অবেলায় অবহেলায় শুধু পড়ে আছে
অনিন্দ্য নগ্নতার অকপটচিত্তে।