আমার দুটি হাত দুটি পা দুটি চোখ দিয়েছেন ঈশ্বর ;
আমি আমার চারপাশে দুটি রঙ দেখি- সাদাকালো ।
এর বাইরেও যে অনেক রঙ ও রঙের খেলা থাকে
তা আমার অজানা নয় বরং জানতে ইচ্ছুক নই ।
কারন আমার তৃতীয় পা নেই
ভাল আর মন্দ এই দুয়ের মধ্যেই আমার বসবাস ।
আমি যখন আমার মনের গভীরে ডুব দেই
দেখি একটি ফুলের বাগান
একটি গার্ডেন চেয়ার
হেমন্তের সুবাতাসে একজন ভাসছে ...একটি মুখ...চিরচেনা
সেই ভুরু পাতলা সেক্সি ঠোঁট উন্নত নাক
কবিতার ঈশ্বর ।
আমার হৃদয়ের গভীরতম স্পন্দন থেকে ফুলের সুবাসের মতন
উৎসারিত হয় তোমার উপস্থিতি ।
তুমি আমায় চুরি করে নিয়ে গেছ কোন সে দিনে ?
বিশ্বাসেরই বেড়াজালে আটকে ফেলে
নিজের মাঝেই নিজেকে যে হারিয়ে ফেলেছি কোন সে দিনে...?
জানালার অপাশের অবাধ্য নিকষিত দয়াহীন অচেনা অন্ধকারের
ভয়ঙ্কর অশুভতা থেকে তুমি আমায় আগলে রাখ শিশুর মতন ।
সেই না দেখা না জানা অচেনা অজানা
অন্ধকারেই তোমার বসবাস...
কিন্তু তোমায় কেন ভয় করে না ?
আমি পারি আমার ভালবাসার সুদৃঢ় হাতের আবেশে
তোমায় আলিঙ্গন করে রাখতে
পারিনা আমার ভঙ্গুর আর দুর্বল দুটি পায়ে
তোমার সাথে তোমার পাশে সমান তালে তাল মিলিয়ে হাঁটতে ।
তোমার সবল ঋদ্ধ একটি পা আমার বড্ড বেশি প্রয়োজন
যেটায় আমি ভর দিয়ে তোমার পাশে দাঁড়াবো ।
তুমি কি আছ আমার পাশে ?
আমি আজো জানিনা তোমার নিরবতার কারন
কি ছিল আমার অপরাধ ?
তোমার নিরবতা পাথর সমতুল্য
সেই পাথরে ঢালা হোক না কেন পবিত্র জল
তাতে স্পর্শ করুক অগ্নিসম সূর্যের আলো
আমার অনুরোধে বাতাস সেখানে গেয়ে উঠুক প্রান সঞ্জীবনী গান
হবেনা কিছুই ? ফুটবে না কোন ফুল ?
না কোন ঘাস-লতা- পাতা ? না।
সে পড়ে রইবে নিস্প্রান নিরব হয়ে ।
যেভাবে সে ছিল গত সাড়ে চারটি বছর ধরে ।
তাইতো কষ্টকে বলি রঙ বদলাও
নীল থেকে হও লাল বেগুনি গোলাপি কিংবা সাদা ।
না সেই গাঁঢ় নীল রঙের সাথেই যেন তার আজন্ম প্রেম ।
তবু বলি বলব চিৎকার করে ...
হ্যাঁ বাসি ভালো তোমায় হে কংক্রিট !!
তবু অপেক্ষা , একদিন বদলে যাবে সব
সেই অধরা স্বপ্নকে ধরব বলেই আজও বাস করছি
একরাশ স্বপ্ন নিয়ে স্বপ্নহীন বাস্তবে ।
তোমার ভালবাসার আগুনে আমার দৃষ্টি ও হাত দুটি ক্ষত বিক্ষত
তারা তবু তোমার স্পর্শের জন্য ব্যাকুল ...
তুমিই আমার শত্রু তুমিই আমার বন্ধু তুমিই আমার প্রেমিক
আবার তুমিই আমার কবিতার ঈশ্বর ।
তোমার এক হাতে বিষের অনল আরেক হাতে প্রেমের কাজল ।
তোমার এক হাতে ফুলের মালা আর এক হাতে মরন জ্বালা ।
তবু আছি নিঃস্ব হয়ে তোমার ছায়ার পিছু পিছু ...
এই জীবন নৌকায় আমি যে বড্ড একাকি
হে সঙ্গী মাঝি তোমার তীরে আমার ঠাই হবে কি ?
তুমি পাড়ি দিচ্ছ কৃষ্ণবর্ণের উত্তাল সাগর
কি অপেক্ষা করছে সেখানে ?
অনিশ্চয়তা ? পরাজয় ? নাকি বিজয় ?
জানিনা । তোমার ভালবাসার কারাগারে আমি যে বড় নিরাপদ ।
তুমিই আমায় হাত ধরে দাঁড় করাতে শেখাও
যাতে আমি পড়ে না যাই
তুমি বাস্তবে আসনা
আস স্বপ্নে
মনে হয় এই বুঝি এল তোমার ফোন কল...
কিন্তু আসে নাহ ...
তবু আমি সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়ে বলব শুনো হে বিশ্ব ..
আমি সমাজের আইন নিয়ম শৃঙ্খলা কোন কিছুকেই গ্রাহ্য করিনা ...
অপবাদকে গণ্য করিনা...কলঙ্ককে পাইনা ভয় ...
কবিতার ঈশ্বরই আমার প্রেমের মন্দিরে আমার ভালবাসার পুজোর ফুল...
কবিতার ঈশ্বরই আমার তৃতীয় পা...
আমার পা... আমার পা... পা ।