প্রশ্ন করিল মরম আমায়
প্রিয় কোন সে ফুল ?
লাল,কৃষ্ণ,শুভ্র গোলাপ !
নিশির সুঘ্রাণ-রাণী হেনা নয়তো !
নাকি ঐ বাগে ফোঁটা জবার দুল ?
বেলীর বসন্ত সুরভীত পবন !
নাকি বকুলেরই মালা ?
গন্ধরাজের ঐ রাজ্য নয়তো !
নাকি বিলের সদ্য ফোঁটা শাপলা, তার পানা ?
পুকুর জলে ভাসমান রক্তিম পঙ্কজ !
নাকি সূর্যমুখীর অগ্নিঝরা হাঁসি ?
খালের ঐ কলমি ফুলটা নয়তো !
নাকি দোলনচাঁপায় গিয়াছ ফাসি ?
কৃষ্ণচূড়ার ঐ সাজানো আবাস !
নাকি চামেলী-চম্পার সাজ ?
কেঁতকীর কুঞ্চন নয়তো !
নাকি রজনীগন্ধার হিমেল সুবাতাস ?
শিমুলের নরম বিছানা !
নাকি পলাশের রাঙা ক্যানভাস ?
গেন্ধা ফুলটা নয়তো !
নাকি বালিময় তীরে দাঁড়িয়ে থাকা ঐ কাঁশ ?
টগরের ঐ বৃষ্টিস্নান !
নাকি মল্লিকার দণ্ডায়মান হাসি ?
কদম্বের বর্ষাস্নাত পাঁপড়ি নয়তো !
নাকি পাপিয়ায় হইয়াছ তুমি দাস ই ?
ওষ্ঠদ্বার খুলিল অবশেষে;
বলিলাম মরম হে, নিয়েছিস বহু ফুল নাম !
উত্তর পাবি মোর, এইবার তুই থাম ।
ইহা সেই ফুল যাহা মোর মন ক্যানভাস আঁকিছে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে;
ওহে তাহা শেফালি ফুল ! শিউলি ফুল !
হিয়া মোর মজিছে বুঝি তাহার গুণগানে ।
ঠিকই ধরিয়াছ , তাহা শেফালি ফুল
যাহার ধ্যানে এই হিয়া মশগুল ।
শেফালি কিংবা শিউলি !
যখনই তাহার পাঁপড়ি মেলে ধরে ,
সুঘ্রাণ তাহার সমীরে যায় মিশিয়া
আমার দিবা-রাত তাহাতেই আছড়ে পড়ে ।
পুলিন পাইয়াছে হিয়া শেফালির তরে,
এই সেই ফুল যাহা বাঁধিয়াছে আমায় তাহার প্রেম ডোরে ।
শিউলি প্রসূনের মালা !
যদি তাহা হইতে একটি পাঁপড়িও ঝরে যায় !
চিত্তে দহন শুরু হয় !
বাড়িয়া যায় মরম জ্বালা ।
শেফালি ফুল !
তোমার মোহিত করা ঘ্রাণ, পাঁপড়ি আর তোমাতে গাঁথা মালা,
অনেক ভালবাসি ;
ক্ষণপুষ্পিত তুমি ! তোমার আগমনের প্রতীক্ষা !
তাই তোমার পাদপ নীড়ে,
বারবার ফিরে আসি ।