জানিনা জীবনানন্দ দাশ নাটোরের বনলতা সেনের নিকট
কীরূপ শান্তি পেয়েছিল!
তবে আমি এটা বলতে পারি জীবনানন্দ দাশের থেকেও
বেশি শান্তি পাই আমি, তোমার থেকে।
আমি এমন-ই দূরবর্তী সম্পর্ক কাছে পাওয়ার
আকাঙ্ক্ষায় আছি যে,
সমাজে তোমার নাম বলতে পারি না।
জীবনানন্দ দাশ পেরেছে।
সে বলেছে নাটোরের বনলতা সেনের কথা।
তোমার নাম ঠিকানা না বলে-
আমিও তোমার কথা বলি।
আমারও ইচ্ছে করে, ধানসিঁড়ি নদীর তীরে বেড়ে ওঠা,
সভাকবি কুসুম কুমারী দাশের ছেলে,
জীবনানন্দ দাশের মত বলতে নাটোরের বনলতা সেন।
তোমার ঠিকানা নাটোর নয়, তোমার নাম বনলতা সেন নয়।
তোমারও আছে ঠিকানা, তোমারও আছে নাম।
আমি তোমার নাম ধরে ডাকি,
তোমাকে ঘিরে স্বপ্নে বিভোর থাকি।
নাটোরের বনলতা সেন জীবনানন্দ দাশকে-
জিজ্ঞেস করেছিলো, "এতদিন কোথায় ছিলেন?"
তুমিও আমাকে জানতে চাও,
তোমার অভিমানের বুদ্বুদ উৎপত্তি থেকে।
তোমার থেকে আমি দূরে, বহু দূরে!
পটুয়ার পটে আঁকার জন্য কিংবা পর্তুগিজদের
আগমনের জন্য অথবা পট্টুয়ার খালের জন্য যে
জেলার নাম পটুয়াখালী, সেখান থেকে- তোমার কাছে চিঠি লিখি।
সঙ্গে পাঠিয়ে দেই তোমার চিঠি লেখার কাগজ।
কিন্তু অভিমানী তুমি, আমার পাঠানো কাগজ অবহেলা করো।
আমাকে লিখ না আর চিঠি! এমনকি গ্রহণ করো না আমার চিঠি।
অতঃপর মিলনে হৃদয় টানে!
গ্রহণ করো আমার চিঠি।
আমার চিঠির উত্তর আসে শাসন ভরে।
তবুও সেই শাসনে কিংবা অভিমানে আমি ভালোবাসা দেখি।
আমি নিরুপায়,
সমাজের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত তোমার আমার বয়সের ঘোষণা।
তবুও ভালোবাসি, আমি তোমাকে ভালোবাসি।
সুন্দর পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো দিক ভালোবাসা।
যে ভালোবাসা আছে বলে, আমি আমার বাবার কথা বলি।
যে ভালোবাসা আছে বলে, আমি আমার মায়ের কথা বলি।
যে ভালোবাসা আছে বলে, আমি আমার ভ্রাতার কথা বলি।
যে ভালোবাসা আছে বলে, আমি আমার বোনের কথা বলি।
যে ভালোবাসা আছে বলে, আমি বন্ধনের কথা বলি।
ভালোবাসা আছে বলেই, আমি তোমার কথা বলবো।
অনেকদিন হয়ে গেল, তোমাকে চিঠি দেই না।
তুমিও কোন চিঠি দেও না।
তুমি কি আমাকে ভুলে গেছ? না আমি তোমাকে ভুলে গেছি?
আমি তোমাকে ভুলিনি।
তুমি আমাকে ভুলে যাবে
এমনভাবে তো তোমাকে ভালোবাসি নি।
আমি তোমাকে ভালোবাসি বইয়ের মত,
আর তুমি আমাকে ভালোবাসবে বৃক্ষের মত!
নতুন বইয়ের ঘ্রাণ যেমন মিষ্টি তেমনি পুরানো বই স্মৃতি।
অতএব বই নতুন কিংবা পুরাতন হোক না কেন
বই গ্রহণ করা যায়, পড়া যায়, ভালোবাসা যায়।
আর বৃক্ষ!
বৃক্ষ আমাদের ছায়াতলে আগলে রাখে।
যে বৃক্ষ ভালোবাসে সে পৃথিবী বাঁচিয়ে রাখে।
তুমি আমাকে বৃক্ষের মত ভালোবেসে
আমাদের ভালোবাসা বাঁচিয়ে রাখবে।
আজকেও তোমার নাম বলতে পারলাম না।
তবে তোমার কথা বলে গেলাম।
তুমি শ্যামা বর্ণের, কালো চুলের,
কপালে ছোট টিপ পরা, গলায় মালা,
আকাশ নীল শাড়িতে, সুন্দর চোখের
আর আমার পছন্দের ব্যক্তিত্বের অধিকারিণী।
তুমি আমার ভালোবাসা, আমি তোমাকে ভালোবাসি।
মুহাম্মদ আল ইমরান
তারিখ: আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।