গাঁয়ের মেঠো পথটি ধরে চলছে ছুটে গরুর গাড়ি
দুপাশে তার দাঁড়িয়ে আছে ঝাকড়া মাথা তালের সারি
পথ গেছে দূর গঞ্জে গাঁয়ে এঁকেবেঁকে সাপের মতন
ডাইনে বায়ে বিছিয়ে রেখে ফুল-ফসলি মানিক-রতন।
বোঝাই গাড়ি গড়িয়ে চলে খচখচানি আওয়াজ তুলে
উতল বাতাস দেয় দোলনী ডোবায় ফোটা কলমী ফুলে।
খাঁখাঁ রোদে মাঠ পুড়ে যায় মাথাল মাথে গাঁয়ের চাষী
শস্য সমান ফলায় যেন সিক্ত মুখে সোনার হাসি।
ঘোমটা মাথায় নাইওরি যায় গরুর গাড়ির ছইয়ের তলে
আলতা পায়ে রূপার নূপুর, সোনার নোলক উঠে দুলে,
পথের মাথায় পথ ঠেকেছে চলছে যেন ঠুকাঠুকি
ডাইনে গেছে পথ বেঁকে আর বা-পথ গেছে বায়ে ঝুঁকি।
মধ্যিপথে বট-পাকুরের ছাতার মতন ছায়া মেলা
তারি তলে জিরোয় পথিক নেয় জুড়িয়ে ক্লান্তি বেলা,
কচিঘাসে উদোর পুরে মাঠের গরু হাম্বা ডাকে
করছে শাসন হল্লা করা তিড়িং বিড়িং বাছুরটাকে।
ঝাঁপি কাঁধে গাঁয়ের কিশোর ছুটছে মাঠে উদোম গায়ে
আ'ল ঘেঁষা ওই ফুল-পরাগে সোহাগ ভরে হাত বুলায়ে,
এমনি মধুর কল্পছবি আঁকছি মনের রঙতুলিতে
ফাগুনদোলা লাগছে যেন হৃদ বাগিচার ফুল-কলিতে।।