আমার খুব ইচ্ছে করে, “কেউ একজন আমাকে কবি বলে ডাকুক”,
যদিও সত্যি বলতে আমি কোন কবি নই,
তবুও খুব ইচ্ছে করে কেউ একজন আমাকে ইচ্ছুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন করুক, “কবি, আমাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখবেন…?
জানেন, আপনার কবিতা হতেই কেবল আমি কপালে কালো টিপ পড়েছি, এইযে দেখছেন হাত ‍দু’টোয় মেহেদি পড়েছি তাও কেবল আপনার কবিতায় উপমা হবার জন্য।”
তারপর তার শাড়ির আঁচল দেখিয়ে প্রশ্ন করুক, “কবি, আমার শাড়ির ভাঁজগুলো আপনার কবিতায় তুলে ধরবেন…?”
আমাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই সে আরও বলুক,
“জানেন কবি, আমি শাড়ি পড়তে জানিনা তবুও কেবল আপনি কবিতা লিখবেন ভেবেই শাড়িটা পড়েছি।”
.
কেউ একজন আমাকে তার চুলের খোঁপা দেখিয়ে একটু সরল কণ্ঠে বলুক,
”আমি জানি আমার চুল বিশেষ কিছু নয়, তবুও আপনার কবিতার অংশ করবেন এই আশায় ত্রিশ মিনিট ধরে খোঁপা সাজিয়েছি, দেখেন একটা গোলাপও গেঁথেছি।”
সে আরও বলুক, “খোঁপা চুল নিয়ে বোধহয় ভালো কবিতা হয়না!, আচ্ছা খোঁপা খুলে ফেললাম”
এই বলে সে তার চুলগুলো এলিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করুক, “কবি, এবার হবে কি…?”
.
আমার খুব ইচ্ছে করে কেউ একজন আমার পাশে এসে বসুক কেবল একটা কবিতার আশায়,
আমার হাত ধরে সে একটু মৃদু হেসে বলুক, “কবি, আমি হাসতে জানিনা, তবুও এইতো হাসলাম শুধুমাত্র কবিতার জন্য।”
তারপর সে আরও বেশি কাছে এসে ভাসা ভাসা সাদা কালো চোখে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা স্বরে বলুক,
“আমার চোখে কাজল খুব বেমানান সে আমি জানি, তবুও কাজল পড়েছি আপনার কবিতায় উপমা হবো বলে।”
সে তার হাতের আঠাশটা কাচের চুড়ি আমাকে ধরতে দিয়ে বলুক, “সবগুলো চুড়ি কেবল আপনার কবিতার পঙক্তির জন্য পড়া।”
তার অমলিন হালকা লালচে ঠোঁট জোড়া সম্মুখে এনে ভয়ে ভয়ে বলুক, “আমার ঠোঁট দু’টো নিয়ে কেবল একটা শব্দ লিখলেই হবে।”
.
আমি জানি, সত্যি বলতে আমি কোন কবি নই, তবুও চাই কেউ একজন আমাকে এভাবেই বলুক,
“কবি, কেবল আপনার কবিতা হয়ে শুধু আমিই থাকতে চাই, আমাকে করবেন আপনার কবিতা…?”
তখন আমি তার পায়ের আলতা ছুঁয়ে বলবো, “কবিতার জন্যতো তোমার পা’দুটোই সার্থক উপমা, আমি ঠিক তোমাকেই লিখবো আমার সমস্ত কাব্য জুড়ে।”
সে ভেজা ভেজা চোখ তুলে বলুক, “জানেন, আলতাও পড়েছিলাম কেবল কবিতার জন্য তবে ইচ্ছে করেই বলিনি যদি ভুল…”
কথা শেষ না হতেই তার লাজুক ঠোঁটে আঙুল চেপে বলবো “না বলাটাই ভুল হয়েছে, এমন যেন আর না হয় কোনদিন, চোখের কাজল মুছোনা জলে।”
.
২৬/০৩/২০২০