আফ্রিকা পেরিয়ে বুনো মানুষের সর্বশেষ যে প্রজাতিটি অস্তিত্বের সংগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিল
ক্রমশঃ পূবে ও পশ্চিমে , বন্ধুর থেকে সমতলে
বিবর্তনের জ্ঞানীয় উৎকর্ষে তাদের বৃহত্তর অংশ
কর্মে ও চেতনায় বেশ খানিকটা মানুষ হয়ে উঠেছে।
প্রাচ্যে যেখানে সূর্যালোক বিচ্ছুরিত হয় প্রথম সকালে সেখানে ফলেছে আজ ধর্মের ফসল,
বর্বরতার বাড়ন্ত উর্বরতায় অবদমিত সবুজের সম্ভাবনা।
সভ্যতার অনুষঙ্গে শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার ধর্ম
কখনো ধারণ করেনা ভিন্নতা, বৈচিত্র্য হয় বিলুপ্তপ্রায়।
ব্যক্তিনীতি, সমাজনীতি বা রাজারনীতি
একত্রে নতজানু হয় ধর্মনীতির বৈশ্যতায়।
তাই জনপদ থেকে জনপদে আজ জ্বলছে আগুন
পুড়ছে মানুষ, মরছে নির্মম পাশবিকতায়।
সমতল হতে পাহাড়, থেকে থেকে মুখরিত হয়
ধ্বংসের তাণ্ডবলীলায়,
মৃত্যু উপত্যকায় বার বার তোফাজ্জলেরা মরছে
অকারণ হেলাফেলায়।
লোকালয় পুড়ছে, মাজার জ্বলছে,
মন্দিরের সাথে ভাঙছে সংখ্যালঘুর হৃদয়।
দলের বিরুদ্ধে দলে, মতের বিরুদ্ধে মতে মহাপ্রলয়,
মারফতী শরীয়তে, সুন্নির কাছে শিয়া বিপন্নপ্রায়।
কোথাও সংখ্যাধিক্য গোমাংসের গন্ধে প্রাণ কেড়ে নেয়
কোথাওবা সংখ্যাল্পতায় গো হারা হয়ে জীবন দিতে হয়।
মানুষের খোলস ছেড়ে হিংস্রতায় জেগে ওঠে ওরা
শ্রেষ্ঠত্বের আপন ঝাণ্ডা তুলে ধরে আদিম উন্মত্ততায়।
রক্ত পিয়াসী উন্মাদনায় ওরা বার বার ভুলে যায়
রক্তের রং লাল, ব্যথা একি অনুভূতিতে যন্ত্রণাময়।
অসহায়ত্বের ভাষা সর্বত্র এক, হোক সে ফিলিস্তিন কিংবা দীঘিনালায়,মানবতা চাপা পড়ে জাতীয়তায়।
হাজার কোটির সংখ্যায় মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়,
মানুষ বড় কমছে দুনিয়ায়, সবাই শ্রেষ্ঠ হতে চায়।
আধিপত্য-মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিযোগিতায়
সভ্যতার অর্জনের গতিপথ পিছনের দিকে ধায়।
ধর্ম-বর্ণ-গোত্র কিংবা ভাষায় ছোট যারা
আঘাতে আঘাতে প্রতিনিয়ত বিপর্যস্ত তাঁরা।
তবুও বেঁচে থাকার আশায় রয় চোখ মেলে,
ওরা স্বপ্ন দেখে বলে ভবিষ্যৎ বাঁচাতে হলে
মানুষের অবয়বে থাকা পাশবিক স্বত্তার
মানবিক মানুষ হয়ে ওঠাটা একান্তই দরকার।
মানুষের ছোট্ট পরিধির ক্ষুদ্র জীবন হোক বিকশিত
ঝলমলিয়ে দল মেলে হেঁসে ওঠা শতদলের মতো।
মুক্তি পাক স্বাধীনতা, বঞ্চিত আর নিপীড়িত।
সূর্যালোকের মতো সমতায় লিখিত হোক
অধিকারের সুযোগের বন্টননামা।
মানুষ আবার মানুষ হয়ে উঠুক
এইটুকু মাত্র চাওয়া।