আমার একটি আশ্রয়স্থলের প্রয়োজন ছিলো।
আর্যভট্টের শূন্য আবিষ্কারের সময় থেকে আর্জেন্টিনায় বান্ধবীর সাথে রবীন্দ্রনাথের দেখা করার মুহূর্ত পর্যন্ত ঘুরে বাবা আমার জন্য একটি নিরাপদ প্রাসাদের ব্যবস্থা করলেন।

আমার খাবারের প্রয়োজন ছিলো।
বিভিন্ন সভ্যতা,সংস্কৃতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে ল্যাভয়সিয়ের সাথে কথা বলে ইবনে সিনার ফার্মাকোলজির সাথে সমন্বয় করে বাবা আমাকে এক মুঠো সুষম খাবার মুখে তুলে দিলেন।

আমার কিছুটা জ্ঞানের প্রয়োজন পড়ে।
সক্রেটিস,রুমী আর আইনস্টাইনের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে বাবা খুব দ্রুত সময়ে আমাকে পৃথিবীর জ্যামিতিক কোনের হিসাব ও চাঁদে গেলে মানুষের ওজনের তারতম্যের বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিলেন।
আমার জীবনবোধের জাগরণ ঘটালেন।

আমার কিছু অর্থের প্রয়োজন ছিল।
বাবা সুমেরীয় থেকে শুরু করে সকল সভ্যতা পাড়ি দিয়ে বেশকিছু অর্থ আমার হাতে তুলে দিলেন।
প্রয়োজনে পৃথিবী বিক্রি করে আমার হাতে পয়সা তুলে দেয়ার আশ্বাস দিলেন।

আমার একটু সুখ দরকার ছিলো।
বাবা নিজেকে একটি ঘাতক হাসপাতালে বন্দক রেখে
নিজের জন্য তীব্র অসুখ কিনে আমাকে একটি মহান সুখ উপহার দিলেন।

আমার ভালোবাসার প্রয়োজন ছিলো।
আমাকে ভালোবাসার অপরাধে জেলখানায় বন্দি হয়ে-
বাবা আমাকে মহাজগতের পবিত্রতম ভালোবাসা দান করে গেলেন।

আমি আবার বাবার মতো অতকিছু করিনি!
ভালোবাসার দায়ে অভিযুক্ত বাবাকে জেলখানায় রেখে দায়মুক্ত হয়ে একটি দাতব্য বিনোদনকেন্দ্র চালু করি।
এই বিনোদনকেন্দ্রে জেলখানায় বন্দি আমার বাবার মতো অনেক বাবাদের সাময়িক জামিনে মুক্ত করিয়ে এনে জোকার হিসেবে অভিনয় করাই।
দর্শকরা হাসেন,আদর্শ নাগরিকেরা হাততালি দেন।
সুশীলব ও জ্ঞানীগণ আমাদের জীবনে জোকারের প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা করে বক্তব্য প্রদান করেন।
আমরাও একমত হই যে-'জোকারের কৌতুক ছাড়া আমাদের চিত্তবিনোদনের চাহিদা মেটানো অসম্ভব।'
তাই,আমরা জেলখানায় বন্দি জোকার তথা বাবাদের শাস্তির পাশাপাশি কৌতুক আর বিনোদনের উপর উচ্চতর কোর্স নেয়ার দাবিতে গ্যালাক্সিব্যাপী আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিই।
-০-