আমি এক বিস্তীর্ণ নগরীর প্রাণী
আমার মতো আরো অসংখ্য প্রাণ
ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এতে।
যেখানে বাতাসে ভাসে ঘামের গন্ধ,
টাকা উড়া উড়ি করে সর্বত্র।
যেখানে সকল আত্মা মৃতপ্রায়,
মরুভূমির মত রুক্ষ হয়ে গেছে মানবতা।
আমি সেখানেই বাস করি,
খাই-দাই, ঘুমাই, রঙিন স্বপ্ন বুনে চলি ক্রমাগত।
যেখানে ময়লা-আবর্জনার ছড়াছড়ি,
সে হোক ডাস্টবিন কিংবা মানুষের মন,
সেখানে উড়ে যেতে চাই কাকের মত, নির্লজ্জ ভঙ্গিতে।
ময়লার ভাগাড় থেকে একটি মাত্র শব্দ খুঁজে বের করতে চাই,
যে শব্দ খুঁজে পেলে এ দেশে আর কোনো ময়লা-আবর্জনা থাকবেনা।
বাতাসের গন্ধ হবেনা আর ঘামে ভেজা দুর্গন্ধের ন্যায়।
সেখানে সুবাস ছড়াবে সর্বক্ষণ, ফুলের মত ।
হাজারো পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হবে সে বাগান।
রঙিন ডানাওয়ালা প্রজাপতি দল বেধে উড়ে আসতে থাকবে।
এসব স্বপ্ন আমি রাতে দেখিনা, চোখ বন্ধ করেও নয়।
সত্যিই বিশ্বাস করেন, দিবা স্বপ্ন সব আমার।
চোখের পাতা পর্যন্ত বন্ধ করিনা, চোখ কান খোলা রেখে,
পাকা শিকারির মত, সজ্ঞানে দেখি এসব।
এ স্বপ্ন পূরণ হলে পৃথিবী টা পাল্টে যাবে, সমাজ মুক্তি পাবে।
অতএব এ স্বপ্ন দেখা আমি ছেড়ে দিতে পারিনা।
আমি মুঠো বন্দি করতে চাই সেসব, গিলতে চাই গোগ্রাসে।
আমি খুঁজে পেতে চাই সে শব্দটিকে
'মানবতা' নামক সে এক আরাধ্য শব্দ।
জানি এ কথা শুনে আপনি অট্টহাসি তে ফেটে পড়বেন,
পাগল ও ভাবতে পারেন।
সে তো মনুষ্য জাতির রোগ।
ভাবুন না আপনার যা ইচ্ছে তাই
তাতে আমার কিই বা যায় আসে!
তবু আমি চাতক পাখির মত চেয়ে আছি,
'মানবতা' নামক একটিমাত্র শব্দের আশায়।
যে শব্দকে খুঁজে পেতে চাই, আলিঙ্গন করতে চাই তীব্রভাবে।
সঞ্চারিত করতে চাই এ গ্রহের প্রতিটি আত্মায়,
কারণ এ আমার স্বপ্ন, এ আমার বেঁচে থাকার প্রতিজ্ঞা।