দেয়ালের ওই কার্নিশে ঝুলে আছো কেন?
সবুজরাঙা পানির পাইপের ধারে।
নির্জন, নিভৃতে, নিরালা তুমি চক্ষুর অন্তরালে।
স্যাঁতস্যাঁতে ভেজা দেয়ালের কার্নিশে।

কেন ঝুলে আছো নয়নতারা তুমি আজো?
গোলাপি রঙে মোড়ানো পাপড়িতে আবৃত হয়ে।
নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে আছো কেন আমার দিকে?
ঘামে ভেজা এ শহরের বুকে।

একাকি নিঃসঙ্গতার বাধনে জড়িয়ে আছো কেন?
অবহেলায়, অতি অযত্নে।
সবুজরাঙা পাইপে শিকড় তলিয়ে,
উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে চলেছো কেন আকাশ পানে?

নয়নতারা কেন তাকিয়ে আছো আজো আমার দিকে?
নিষ্পলক চোখে; তাকিয়ে থেকোনা আর
আকাশে উড়ে চিল, পাখিরা ডাকেনা, গাড়ি ছুটে চলে।
শহরের অলি-গলি সমস্ত ভিজে যায় ঘামে।

তোমার সহাস্য নীল বেদনার বিষে
আজো আমি সিক্ত হতে পারিনি জানো।
কত কিছুতেই না বদলে গেছি আমি অতি সহজে
নিষ্ঠুরতা আমি শিখে গেছি এ শহরে বাস করে।

তবু কেন তাকিয়ে আছো নয়নতারা; কিসের প্রতীক্ষায়?
একাকিত্বের বাধনে জড়িয়ে, সহাস্য চোখে
তাকিয়ো না আর; আমি মরে যাব।
ছুটে চলে হাজারো একাকিত্বের ভীড়ে।

বহু পরে ঘরে ফিরি আমি, ক্লান্ত দিনের শেষে।
জানালার ফাঁক গলে আড়চোখে তাকাই তোমার দিকে।
দেখি দুলছো তুমি সন্ধ্যার স্নিগ্ধ বাতাসে,
উর্ধ্বমুখী হয়ে ছুটে চলো আকাশ পানে।

প্রশান্তি খুঁজে ফিরি, তোমাতে খুঁজে পাই আমি
বসে নিরালা অন্ধকারে ঢাকা জানালার পাশ ঘেষে।
একাকিত্বের মাঝে সঙ্গতা পাই, ছুটে চলি ফের।
শহরের অলি-গলি সমস্ত আবার যাবে ঘামে ভিজে।