নয়টি ইঁদুরের চাপাবাজি
মোজাম্মেল সুমন
একদিন নয়টি ইঁদুর একসাথেই আছে বসে-
আসুন তাদের চাপাবাজি দেখি হিসেব কষে-
প্রথম ইঁদুর ভাবে চাপাবাজিতে নয় সে হারার!
বলতে লাগল- খেয়েছিলাম বিষ ইঁদুর মারার!
বোতলভর্তি বিষ- আমি মাল ভেবেই খেয়েছি!
আমার কিচ্ছু হয়নি বরং অনেক মজা পেয়েছি!
দ্বিতীয় ইঁদুর বলল- ইউনিয়নের গুদামঘরে চাল
ছিল মজুদ- একাই খেয়ে সাবাড় করেছি কাল!
জনগণ চাল নিতে এসে স্লিপে দেখায় নেম যার,
চালের সংকটে অজ্ঞান হয় চেয়ারম্যান মেম্বার!
তৃতীয় ইঁদুর বলল- আমি সেদিন ভাঙা ছাদে
আটকা পড়েছিলাম মালিকের দেওয়া ফাঁদে!
এতোটুকুও ভয় পাইনি বরং মুখে ছিল হাসি-
আমার শক্তি দিয়ে ফাঁদ ভেঙে বেড়িয়ে আসি!
চতুর্থ ইঁদুর বলল- সোনালি পাটের গর্ব আঁশ,
ইচ্ছেমতো কেটে কেটে করেছিলাম সর্বনাশ!
আমি এমনভাবে কেটেছি ভাবিনি কার ওটা!
শালার অর্থনীতির বাজিয়েছিলাম বারোটা!
পঞ্চম ইঁদুর বলল- ধান কেটে রেখেছি গর্তে!
কিছু ছেলে মাটি খুঁড়ে আসে আমায় ধরতে!
গর্তে পানি ঢালে- ধরেই নাকি করবে জবাই!
আমি রেগেমেগে বের হতেই পালালো সবাই!
ষষ্ঠ ইঁদুর বলল- আমার দাঁত ধারালো অস্ত্র!
চাঁদা দেয়নি- তাই কেটেছি পোষাকশিল্প, বস্ত্র!
বৈদেশিক মুদ্রার্জনে করেছি তীব্র নাজেহাল-
সেজন্যই এখন দেশের অবস্থার বাজে হাল!
সপ্তম ইঁদুর বলল- আমি গ্যাংস্টার, ডিজিটাল!
বড়সড় একটা অপারেশনে ছিলাম বিজি কাল!
কী ছিল সেই অপারেশন? কেউ একটু শুধাও-
বাংলাদেশ ব্যাংক লুট করে হয়েছিলাম উধাও!
অষ্টম ইঁদুর দেহ নড়েচড়ে বসে বলতে শুরু
করলো- আরে আমি বীর, বলতে পারো গুরু!
পাহাড়িরা আমাকে ভয়ে ডাকে 'রাজা মশাই'-
কারণ আমিই তো রাগলে পরে পাহাড় ধসাই!
নবম ইঁদুর বলল- ধুর তোদের ফাঁপা কাজ!
এবার তাহলে শোন্ কাকে বলে চাপাবাজ!
বাড়িতে একটা কালো পোষা বিড়াল আছে,
তাকে খেতে দিতে হবে রে- যাচ্ছি তার কাছে!
নয়টি ইঁদুরের চাপাবাজি ঠাট্টায় কোলাহল-
ভাবুন কে বেশি চাপাবাজ যদিও ঘোলাজল!