অদ্রি
মোজাম্মেল সুমন

সূর্যাস্তের খানিক আগে লাল আবিরের আভার মতো দাঁড়িয়ে একটি মেয়ে,
অপরিচিতা হলেও আমি সত্যিই বিমুগ্ধ সেঁজুতির ক্ষণে তার উপস্থিতি পেয়ে।
তার ভাবনায় আমার হৃদয়ে বিকশিত হতে থাকে সদ্য অনুভূতির সাঁঝবাতি,
ক্ষণপরে দেখি মেয়েটি নেই তবে তার আবছায়া রুপখানি ভাসে মাঝরাতি।

ইন্দ্রজালিক মায়ায় অপরিচিতা মেয়েটিকে নিয়ে ভাবতে লাগছে না মন্দ,
মনের খাতায় তাকে নিয়ে বুদ্বুদ করছে পরিচিত ভালোবাসার স্বপ্নিল ছন্দ।
জোনাকির আলোয় ঝিলমিল খেলায় আমি আছি অপূর্ব ভঙ্গিমায় চেয়ে,
মুহুর্তেই আমার সামনে হুরপরী হয়ে আসলো মায়াবতী কাঙ্ক্ষিত মেয়ে।

ছিপছিপে দেহে আলোকলতার মতো কেশরাশি আমাকে উদ্বেলিত করে,
কালো চাঁদের মতো ভ্রুযুগলের চাহনিতে কিংবা চোখের কাজলে মন ভরে।
মুখে মুক্তাঝরা নিষ্পাপ হাসি আর ডাগরডাগর দুটি চোখে প্রেমাগ্নি ঈষৎ,
তার রুপের শুভ্রতা দেখে আমার মমচিত্তে যেনো ভালোলাগা তৈরি বিশদ।

সে এসেছিলো দক্ষ অভিনেত্রীর মতো দীপ্ত পায়ে হেঁটে কপালে ছোট্ট টিপ,
ঝিঙেফুলের মতো দুটি হাতে জ্বলজ্বল করছিলো যেনো ভালোবাসার দীপ।
তার প্রাণোচ্ছল কথাবার্তায় আমি বলার চেয়ে শুনতেই ছিলাম মগ্ন,
সে আমার চোখের সামনে তবুও বারবার মনে যেনো অলিক স্বপ্ন।

সে যেনো হিমেল হাওয়ায় ছুঁয়ে যাওয়া স্নিগ্ধকর  পাহাড়ের মতো দীপ্ত যৌবন,
সুনিপুণা এক কিশোরী যার প্রতিটা কথায় পাই হৃদয় জুরানো মিষ্টি মৌবন।
তার রক্তজবা দুটি ঠোঁটে যেনো সূর্যের রক্তিম আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে,
হঠাৎই মনে হয় তার শরীরে যেনো সৌন্দর্যের রামধনুটি আঁকা বটে।

তার উদারতায় মমতায় আমি তো পলকহীনভাবে নিমগ্নে তাকিয়ে থাকি,
আমার হৃদপিন্ডে সে যেনো এক পোষমানা পাখি, অনুচ্চারিতে শব্দে ডাকি।
তার মাঝে নির্ভেজাল এক বিশালতা কিংবা শুদ্ধ সরলতার রুপ খুঁজে পাই,
সম্ভবত তার নির্মল সবুজময় অবয়বের কারণে তাকে ভালোলাগে তাই।

আমার জন্য একটি কবিতা লিখবেন? মেয়েটি বললো ভীরু ভীরু লজ্জায়,
আমি মাথা নেড়ে বললাম অবশ্যই লিখবো এই মনের মাধুরীর সব সজ্জায়।
কবিতার নাম দিলাম অদ্রি কিন্তু স্বপ্নের ঘুমটা ভেঙে গেলো, সে তো নেই,
নিশ্চয়ই একদিন আমরা মুখোমুখি হবো, সেজন্য বুঝি আছি অপেক্ষায় সেই।