শতবর্ষী বট গাছ
মঈন তাজ
মৃতপ্রায় শতবর্ষী বট গাছটা
কেউ তার যত্ন নেয়না
অবহেলা অনাদরে আজ মরতে বসেছে।
অথচ এক সময় সবুজ পাতায় পল্লবিত গাছটা
কি যৌবন দীপ্ত ছিল!
শীতল ছায়ার পরশ দিতো ক্লান্ত পথচারীদের ।
যার শোভায় সুশোভিত হতো পুরো গ্রাম
সকাল সন্ধ্যা পাখির কুজনে
মুখরিত হতো তার ডালপালা
উদ্বেলিত হতো প্রকৃতি
আহ্ কতইনা সুন্দর ছিল সেই দিন গুলি।
গুড়ি থেকে মগডাল অবধি
শাখে শাখে কত মৌমাছির চাক
অসংখ্য পাখির বাসা আর
দু পায়ে ঝুলে থাকা বাদুড়ের সমাগমে
ছিলোনা একটু ফাঁক।
চাঁদনী রাতের মায়াবী ছোঁয়ায়
লোক কাহিনীর পশরা বসতো
সন্ধ্যা থেকে সেই রাত অবধি
কত সুখ দুঃখের গল্প হতো
কোথায় হারিয়ে গেছে সেই সব।
সিথিল হয়েছে মানুষের বন্ধন
সার্থের অন্বেষণে বেড়েছে মানুষের ব্যস্ততা
সময় নেই কারও সময় নষ্ট করার
এতটুকু ফুসরত নেই কুশলাদি বিনিময়ের
যান্ত্রিক যুগের যন্ত্রণায় মানুষ অস্থির।
দিনে কিংবা রাতে
কারনে কিবা অকারণে
গ্রামের সমস্ত মানুষ একত্রিত হতো
এই গাছটার নিচে।
অথচ এখন আর কেউ আসেনা
বসেনা তার কাছে।
আগের মত আর সুখ নেই মানুষের
অশান্তির প্রখরতা বাড়ছে দিন দিন।
কৃত্রিম সুখ আর শান্তির খোঁজে স্থানান্তরিত মানুষ
অবলীলায় ভুলে যাচ্ছে শিকড়কে।
সেই সব বেদনায় মূহ্যমান গাছটি
একাকীত্ব বরন করেছে নিঃসংকোচে।
যেমন এই বিশ্বায়নের যুগে মানুষ
সেচ্ছায় একাকীত্ব বরন করছে।
জানি পুরনো হারিয়ে যাবে
নতুনের আগমনে সূচিত হবে ধরা
বয়সী বট গাছটাও এক দিন হারিয়ে যাবে
তবু ঐ পুরনো দিয়েই তো নতুনের গড়া।
ঢাকা
১৮/০৫/১৯