মনে পড়ে....?
বনবাস থেকে ফিরে পুনরায় সিংহাসনে অবতীর্ণের পর তোমার সমস্ত কৃপাপ্রার্থীর
মনোরঞ্জনেরর জন্য আমাকে তুমি গনগনে আগুনে ছুঁড়ে মেরে এক পৈশাচিক আনন্দ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছিলে।
তখন তোমার পদলেহন করা অসংখ্য প্রজা উচ্চস্বরে তোমাকে 'সাধু সাধু'বলেছিল।গর্বে তোমার মাথা আকাশ ছুঁয়েছিল।
আমি অসহ্য যন্ত্রনায়
কুঁকড়ে যেতে-যেতে এক অবর্ণনীয়, নৈসর্গিক আনন্দ পেয়েছিলাম তোমার উজ্জ্বল চোখদুটির দিকে তাকিয়ে।
কেননা আমি যে সতী হতে চেয়েছিলাম।
আমার জন্মের সময়ই আমার শরীরে টিকাকরনের মতো সতীত্বের ভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও বেশ কিছুদিন পর,
তোমার যে সমস্ত স্তাবকেরা ব্যক্তিগত কিছু ছোটোখাটো সমস্যার কারনে সেদিনের আমোদ উৎসবে উপস্থিত হতে পারেনি,তারা তোমার কাছে খুব করে আবদার করল আর একবার সার্কাস প্রদর্শনীর জন্য।
তৎক্ষনাৎ তুমি আমাকে ডেকে পাঠালে আর একবার মরনকূপে ঢোকানোর জন্য।
আমি শুধু একটু সময় চেয়েছিলাম।
কেননা আমার শরীর ও মনের দগদগে পোড়া ঘা তখনও ঠিকমত শুকায়নি।
আমার অনুরোধ শুনে তুমি কি ভয়ানক অস্থির হয়ে পড়েছিলে!
তবে কি তোমার এত দিনের এত পরিকল্পনা,এত পরিশ্রম সব পন্ড হয়ে যাবে...!
ইতিহাসের পাতায়-পাতায় স্বর্ণাক্ষরে সৃষ্টির আদি অনন্ত কাল জুড়ে তোমার রাজত্বকাল শ্রেষ্ঠ আসন পাবে কিভাবে?
মুহুর্তে খুন চেপে গেল তোমার মাথায়।
রাজসভা থেকে তৎক্ষনাৎ সমস্ত দেশের রাজপথের মধ্যে দিয়ে আমার চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে আমাকে নিয়ে গেলে এক সুবিশাল,ভয়ঙ্কর গর্তের সামনে।
আমাকে বিভৎস ভাবে ছুঁড়ে ফেলেদিলে গর্তের মধ্যে।
জ্যন্ত চাপা দিলে মাটির ভেতর...!
তুমি যখন হন্যে হয়ে আমার চোখে-মুখে-বুকে মাটি ছড়িয়ে দিচ্ছিলে আমি তখনও তোমার মুখের দিকে করুন দৃষ্টিতে স্থির তাকিয়ে ছিলাম।কেননা কোনো সামান্য কারনে তোমার উঁচু মাথা হেঁট হোক তা আমি কখনও চাইনি।
কেননা জীবনে মরনে আমার একটাই পরিচয় -আমি সতী।
আমি পতিব্রতা।।