বছর ছাব্বিশের যুবক তখন আমি
দীর্ঘ, ফর্সা চেহারা
এক দেখাতেই প্রেম, তোমার সাথে
ফুটফুটে সুন্দর মিষ্টি মেয়ে
তোমার হাতে রেখেছিলাম আমার হাত
গোধুলির আকাশ লাল
সবুজ ঘাসে তোমার নরম কচি পা
দোল খাচ্ছিল হাওয়ার সাথে
এক দৃষ্টে তাকিয়ে তোমার চোখ
আটকে থাকা আমার চোখে
কল্পনার ক্যানভাস দিয়ে
আঁকছিলে ঘর বাঁধার ছবি
নীল ওড়না তা উড়ছিল হাওয়ায়
আর ভারি বেয়াড়া একটা চুলের গোছা
বার বার উড়ে উড়ে এসে
তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে যাচ্ছিল
ওই চুলটাকে হিংসা করতাম আমি
আর তোমার লজ্জিত রাঙা মুখে
আমাকে কাছে চাওয়ার ইঙ্গিত
নাঃ তিথি, তোমাকে আজও ভুলিনি
হাতে হাত রেখে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম
তোমাকেই চাই, তোমারই থাকব
মনে পড়ে তোমার?
সেসব মনে পড়ে?
ওই যে সেই দুপুর
বকুলতলার পাশে আমার মামার ফ্ল্যাট
নির্জনে,
তোমার সাথে খেলতে খেলতে যে কীভাবে...
শুধু আদর করতে চেয়েছিলাম
নিজের খুব কাছে টেনে নিতে চেয়েছিলাম তোমায়
জোর করে ধরে
তোমার ঠোঁটে ডুবিয়েছিলাম
আমার ঠোঁট
নরম শরীরে দাঁতের আঁচড় একটু
তোমার কথা ভাবিনি তিথি
কষ্ট হচ্ছিল তোমার?
কই, বলনি তো?
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল প্রতিদিনের মতই
কিন্তু তুমি?
পালটে গেলে কি?
সেই রাত থেকে একটাও কথা বলনি
রাগ? না অভিমান?
আমি তো শুধু আদর দিতে...
আমি তোমায় বুঝিনি
হয়ত বা চেষ্টাই করিনি
অভিমান কম হয়নি আমারও
কেটে গেছে দুটো বছর
এত টাকা, বাড়ি, গাড়ি
তবুও সব ফাঁকা লাগে
মায়েরও
তাই একদিন ইচ্ছে করেই লিখে ফেললাম
“লম্বা, ফর্সা, সুশিক্ষিত, ব্রাহ্মণ পাত্রি কাম্য,
প্রকৃত সুন্দরী ছাড়া যোগাযোগ নিষ্প্রয়োজন”
মা বলল বেশ ভালো
একবার ও মনে পড়েনি তোমার কথা
বিজ্ঞাপনে চারবার বের হয়েছিল
দেখেছিলে কি?
ঘৃণা হচ্ছিল আমার জন্য?
আজ আমার পাশে
আমার কাঙ্ক্ষিত সুন্দর বউ
টুকটুকে,
আদর করার মত
হয়ত ভাগ্যবান আমি
তবু কেন মনে পড়ে তোমার মুখ
তোমার কথা
তোমার হাসি
হাসছ তুমি
আমার অসহায়তার দিয়ে তাকিয়ে...
কেমন আছ তিথি?