কতবার আমি তোমার চলে যাওয়ার পথে হেটেছি,
কতবার চেয়ে দেখেছি
তোমার শেষবার চলে যাওয়ার পথে।
আমি সরু, সবুজ ঘাষের আকাঁবাকা
পথটার মধ্যিখানে দাড়িয়ে ছিলাম কতকাল!
বৈশাখের শেষ বিকেলে হঠাৎ কালো
মেঘের কূল বেয়ে নেমে আসা প্রথম
বৃষ্টির প্রহরে দাড়িয়ে ছিলাম তোমার পথটায়;
যদি দেখা যেত তোমার কামিজে আটা
শ্যামলা শরীরটা কলার পাতার
নিচে লুকিয় দৌড়ে পালাচ্ছো।
ভরা বর্ষায় আধা ডুবা তোমার
শাপলা, কলমি, পদ্ম ফুটা পথটায়
দাড়িয়ে ছিলাম;
যদি দেখা যেত ধান ক্ষেতের মাঝ আইলটায়
তুমি হাটু সমান সেলোয়ার খুচে হাসের
পালের পেছনে শিস দিয়ে যাচ্ছো বাড়ি।
শরতের ভরা দুপুরে কাশফুলে আবৃত
তোমার চলে যাওয়া পথের ধারে ঘন বন
আদিম বৃক্ষের সমারোহে ঘেরা পুরোনো
দিঘীর পাশে দাড়িয়ে ছিলাম;
যদি দেখা যেত দস্যি মেয়ে কোমরে
উড়না বেধে পাকাঁ জামরুল কুড়ায়।
হেমন্তের সন্ধ্যায় জ্যোছনা
কুয়াশার সাথে মিশে তোমার চলে যাওয়ার পথে
দূর হতে তাকিয়ে ছিলাম ;
যদি দেখা যেত আমনের পাকাঁ ধান ক্ষেতে
ঘাষ ফড়িং আর জোনাকীর সাথে করছো খেলা।
শীতের পৌষ-মাঘ ভুলে
সকালের শিশিরে ভেজা ঘাষের চাদরে
ঢাকা তোমার চলে যাওয়া
পথটায় দাড়িয়ে ছিলাম;
যদি দেখা যেত ভোরের আন্তঃনগর ট্রেনে
তোমার ফিরে আসা।
এখন নিয়মতান্ত্রিক বসন্তকাল,
উলঙ্গ শিমুলের গাছগুলো ভরে গেছে ফুলে,
খেজুর গাছের কাটা ক্ষত-বিক্ষত নাকের
ডগায় লেগে আছে বাশের শুকনো নল,
বাদামপাতায় লালচে-সবুজ- কালো রং লেগেছে।
পাতাঝরা তোমার পথটায়
আমি এখনো দাড়িয়ে আছি;
যদি দেখা যেত দূর গৃহের জানালা দিয়ে
কালির কাজল বিহীন একজোড়া
নিগূড় কালো চোখ!
পল্টন,ঢাকা- ২৮.০৪.২০১৯