এক বৈশাখের মাতাল হাওয়ার সন্ধ্যায়-

তুমি একদিন নীল খাম পাঠালে আষাঢ় বরাবর। আমি বললাম, ও গো বিদেশিনী কে তুমি?

তুমি বললে 'আমি প্রেমিকা।'

তারপর থেকে উচ্ছ্বাস ভরা নীল খাম এসে ভরে যেতে লাগল আমার মুঠো ফোন। আমি দ্বিগুণ উৎসাহে খাম ছুড়তে লাগলাম। সেই খাম গুলো কত গল্প নিয়ে এলো, কত সন্ধ্যা, রাত, চাঁদ, আঁধার আর আলো বয়ে আনল!

আমাদের খামের মাঝে আর একজন অশরীরি ছিল, সে রবীন্দ্রনাথ।
রবীন্দ্রনাথ খুব সূক্ষ্ম সেতু বুনে দিল আমাদের মাঝে।
মাঝে মাঝে শরৎ, বিভূতির মত আরো অনেকেই পোস্টমাস্টার হয়ে আসত।

এভাবে শরৎ, বর্ষা, হেমন্ত - শীত, গ্রীষ্ম, বসন্ত এলো।
অনেক গুলো সন্ধ্যা এলো, ভোর এলো।
কত গুলো নিস্তব্ধ রাত এলো উচ্ছ্বাস আর নীরবতা এলো।
নীরবতার সুর শুনেছি একসাথে দুজনে। কত আঁধারে দাঁড়িয়ে আলো কুড়িয়েছি।

গোধূলিতে সূর্য ডুবেছে, রাতে ডুবেছে চাঁদ সেই সাথে অগোচরে ডুবে গেছি আমি। আমি তোমাতে মগ্ন হইনি নিমগ্ন হয়েছি, ভোর না হয়ে বিভোর হয়েছি। তুমি চেতনায় ভেসেছ আমি অচেতনে মরেছি।

তুমি-

প্রেমিকা হয়ে এসে হয়ে উঠলে দেবী। তোমার অর্ঘ্য প্রাপ্তি কেবল নির্মোহ ঘটনা মাত্র, কিন্তু আমার কাছে ছিল আরাধনা। আমি তোমার বেদিতে ফুল রাখিনি রেখেছি আমার হৃদয়। কিন্তু আমি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি 'দেবীর সাথে সহযোগ  প্রেম হয়না।' দেবীর আসন দেবালয়ে ভক্তের হৃদয়ে না। ভক্তের হৃদয়ে দেবী আসা-যাওয়া করেন কিন্তু বাস করেন না।

আমার হৃদয় তাঁর মহিমার সংকুলান হলোনা তাই।
ভক্ত-দেবীর প্রেমলীলা সাঙ্গ হলো আরেক শ্রাবণের স্যাঁতসেঁতে সন্ধ্যায়।