ফেরা হলো না ঘরে।
এক পেয়ালা চায়ের টানে ফুটপাতের সস্তা দোকানে কেটে গেলো মধুরা বিকাল
একখানা মেঘ ছোঁয়ার আশায় কাঞ্চণজঙ্ঘার চূড়ায় কাটলো হেমন্ত
শিশিরের উদরে রংধনুর জলছবি ধারণের অপেক্ষায় এক দশক
পত্র পল্লবে চোখ ফেলে দেখেছি লিউনার্দো, পিকাশো, ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ।
দাম্ভিক রাষ্টনায়কের মতো তারা কেউ কোন মন্তব্য না করে
টাইম মেশিনে চেপে আমাকে পিছে ফেলে চলে গেছে যে যার গন্তব্যে।
গ্রহের ফেরে পথের সাথেই দেখা হলো আমার পথে, ফেরা হলো না ঘরে।
ঘরে ছিল অভুক্ত স্ত্রী-জননী-সন্তান, উঠানে জলাতংক রোগে আক্রান্ত পোষা কুকুর,
ছাদে কবুতরের খোপে নতুন ছানা যারা আমার হাতের মুঠোকে মানতো
বিশ্বস্ত খাদ্য ভান্ডার, আমাকে নেহায়েত দরকার ছিল তাদের।
অথচ পূর্বাপর না ভেবে এক খানা শব্দের জন্ম দেখার তীব্র আকাংখায়
জল্লাদের মতো আর্নেস্ট হেমিংওয়ের বন্দুকের নলে পুড়ে দিয়েছি জীবন্ত বারুদ।
ইতিহাস সাক্ষী, আমি সে কাব্যের দুঃখ শিশুকে জন্মাতে দেখেছি
কী উন্মত্ত ছিল সে শিশুর কণ্ঠস্বর!
অবশেষে তাও ক্রমশই গিটারের ধ্বনির মতো মিশে গেছে পুরাতাত্বিক বাতাসে।
আমাকে স্পর্শ করেনি।
তারপর আর কোনো দিন ঘরে ফেরা হলো না আমার।
(কাব্যগ্রন্থ: 'আকাশটাকে বেচে দেবো নামমাত্র দামে')