ছিলে পাখি সাথি হারা নদীচড়ে দিশেহারা
করেছিলে একা বিচরণ,
হংসমিথুনরুপে প্রবেশিলে একই নীড়ে
চৌদ্দশ তের সনের চৌদ্দ শ্রাবন ।
আজিকার এই দিনে তোমাদের শুভ পরিণয়
নিজেরে করে বলিদান
চেনারে দুরে ঠেলে অচেনারে কাছে টেনে
করিলে বরণ ।
জীবনের একাকীত্ব বেদনা বিরহ যত
হল অবসান,
আসিলে যুগলরুপে সংসার সুখনীড়ে
গেয়ে নবজীবনের গান ।
ছিল যত শুন্যতা করিলে পূর্ণতা
নবজীবন করিলে সূচনা,
জীবন নদীর বাঁকে দুটি পাখি একই শাখে
সুখনীড় করিলে রচনা ।
আজিকার এই দিনে বসি পাশে বাতায়নে
ভেব দেখ একা নিজ মনে,
সেদিনের মতো আজও বিহগীরা তরুশাখে
গায় গান নবসুর ও তানে ।
সেদিনের মতো আজও ডালে ডালে ফুলকলি
ফোটে আর গন্ধ ছড়ায়,
সেদিনের মতো আজও পুষ্পরেনু শত
উড়িতেছে পূবের হাওয়ায় ।
সেদিনের মতো আজও হৃদয় বাঁশরী বাজে
প্রাণে জাগে নব আনন্দ,
মৌসুমী বায়ু ভরে আসিতেছে থরে থরে
ফুলের সৌরভ ও গন্ধ ।
তেমনি পাখির মতো তেমনি ফুলের মতো
হোক না জীবন,
জীবনে বেদনা যত আনন্দ হয়ে শত
সুরের লহরী তুলুক নদীর মতন ।
দূর হোক অমঙ্গল আর পাপ তাপ ভয়
মুছে যাক সিক্ত নয়ন,
নবরুপে শ্রাবণের হর্ষ ধ্বণি
নবতানে দুটি হৃদে করুক রণন ।
তোমাদের দুটি মন দোলা দেবে অনুক্ষণ
প্রতিটি চৌদ্দ শ্রাবণে,
সেদিনের মতো সদা দুজনেই ভেসে যাও
নিযূত সুখের প্লাবনে ।
অধরে সরল হাসি হাত ধরে পাশাপাশি
এভাবেই যাক না জীবন,
সংসার মায়াজালে সব দু:খ স্মৃতি ভূলে
ভালবেসে যাও আমরণ ।
শাওন আসিবে ফিরে তোমাদের সুখনীড়ে
মেদুর বরষার ছন্দে,
সেক্ষণে দুটি প্রাণে কদম্ব সুরভী ঘ্রাণে
জীবন ভরুক মহানন্দে ।
আজিকার মতো শত এ জীবনে বার্ষিকী
পালিত হোক নবহর্ষে,
জীবন ও সংসারে প্রতি ক্ষণে প্রতি রণে
খোদার করুনা যেন বর্ষে ।