সত্য দাদু,
হ্যাঁ আমাদের হাবাাসপুরের সত্য দাদুর কথা বলছি ;
সে তো মরে গেছে বহু বছর আগেই,এমন কি যুগও পেরিয়ে গেছি,
পদ্মার শ্মশান ঘাটে তাকে দাহ করা হয়েছিল -
না কি বালিঘাট করা হয়েছিল ঠিক মনে নেই।
তবে মরে গেছে এটা শতভাগ সত্য।
তারপর সত্য দাদুকে আমি বহু খুঁজেছি,
হাবাাসপুরের খেয়া ঘাটে,
ফেয়া নৌকায় দাঁড়ের পাশে,
যেখানে বসে আপন মনে তিন চার কিলো প্রমত্তা পদ্মার উত্তাল ঢেউ মাড়িয়ে দাঁড় বাইতো,
যাত্রীরা ভয়ে আঁৎকে উঠলেও সত্য দাদু দাঁড় বাইতেই থাকতো অকুতোভয় বীরের মত,
সে ছিল উত্তাল পদ্মার নির্ভিক সৈনিক।
সন্ধ্যা হলে বর্ষিয়ান শরীর নিয়ে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে ঘরে ফিরতো,
সত্য দাদুর সন্ধ্যানে-
আমি ঘাট থেকে তাঁর বাড়ি ফেরার পথে চেয়ে থেকেছি
বহু দিন, বহু বছর।
মাঝে মাঝে সত্য দাদুর ছেলে শঙ্কর কাকুর কাছে জানতে চেয়েছি,
সেও বলতে পারেনি, শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থেকেছে অবোধ শিশুর মত।
সত্য দাদুর নাতি সঞ্জয় আমার ছাত্র ছিল,
ওকে প্রায়ই বলতাম, তোমার ঠাকুরদা সত্য দাসকে দেখেছ কী?
দেখেছি স্যার, কিন্তু দাদুতো মরে গেছে সেই কবে।
সত্যের পথ ধরে সঞ্জয়ও চলে গেছে অকালে,
ঠিক পরিস্ফুটিত হবার পূর্বেই যেমন করে কুঁড়ি ঝরে যায়।
স্পষ্ট মনে আছে পদ্মার বুকে জেগে উঠা বালিচরে ওর সমাধি দিয়েছিলাম,
চকচকে বালি ওর করবে ছিটিয়ে দিয়েছিলাম অশ্রুজলে,
ওর মাসীর গগণ বিদারী আহাজারিতে আকাশ- বাতাস ধ্বনিত হয়েছিল,
যা আজো আমার কানে বাজে।
সত্যের পরে তার নাতিও গেছে,
আমি বৃথাই সত্য খুজি নিশিদিন।
এতদিনে বুঝলাম সত্য দাস সত্যি মরে গেছে,
এখন আমরা অসত্যের পথে হাঁটি -
ভুল পথের যাত্রী হয়ে;
সত্য সে মরে গেছে,
তাই এখন আর সত্যকে খুঁজিনা একদম।
***