শীত এখনো আসেনি,তাই আমার লেপ অথবা কম্বল লাগেনা,
আমি এখনো রাতে উদম গায়ে অবলীলায় ঘুমিয়ে যাই।
আমার শয়ন ঘরটি এখনো পাটকাঠির বেড়া,
উপরে ঢেউটিনের ছাউনি,আটপৌরে কাঠের খিলওয়ালা দরজা;
কই হিমেল হাওয়া এখনো টের পাইনা তো!
এমন কোন রোগেও আষ্টেপৃষ্ঠে জাপটেও ধরেনি যে বুঝতে পারবোনা।

শীত এখনো আসেনি,
যদি আসতো টিনের চালে টুপটাপ শিশির পরতো
আর আমি স্পষ্ট শুনতে পেতাম গভীর রাত অবধি,
সদ্য প্রসূত কুকুর ছানার কান্না কানে বাজতো,
হয়তো সম্ভব হলেও ওদের কোন উপকারে এগিয়ে যেতামনা,
শীত এখনো আসেনি,
যদি আসতো সোবাহানের চায়ের দোকানে ভীর থাকতো,
ঠোঁট লাগিয়ে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দিতো অনেকেই,
সেই সাথে ভোটা-ভূটির জাঁদরেল আলাপ হতো।

শীত এখনো আসেনি,
যদি আসতো সমাজকর্মীরা কম্বল বিতরণ করতো,
একটা কম্বলের জন্য কত অভাগী আহাজারি করতো,
সারিবদ্ধ লাইনে দাঁড়াতো অগণিত কাঙাল-কাঙালী।
শীত এখনো আসেনি,
যদি আসতো আমারা দাদী মাটির মালশায় আগুন পোহাতো,
খুব সকালে নাড়ার আগুনে সাঁজালের উত্তাপ নিতো জমিরে বাপ,
পাশে অগণিত নাতি-পুতি নিয়ে।
শীত এখনো আসেনি,
যদি আসতো তবে সকালের শিশিরে পায়ের পাতা ভিজতো,
খেজুর গাছ থেকে চুঁয়ে চুঁয়ে পরা রসে ভর্তি ভাঁড় বয়ে নিয়ে যেতো গাছি,
ভাপা পিঠার পসার বসতো চরপাড়া মোড়ের বটতলায়।

শীত এখনো আসেনি,
শীত আসলে কুণ্ডুবাড়ির পুরনো পুকুরে চুপটি বসে থাকতো গা ফুলিয়ে কানি বকেরা।
শীত এখনো আসেনি,
শীত আসলে প্রতি সন্ধ্যায় ভোটের মিছিল হতো,
মিছিল শেষে বিড়ি টানার ধূম লেগে পরতো,
চা পানের প্রতিযোগিতা হতো,
হট্টোগোল হতো।

শীত এখনো আসেনি,
হয়তো আসবে,
তবে এবার যখন শীত আসবে তখন আমি অসুখে পরবো,
আমার শরীর ভীষণ ঠাণ্ডা হয়ে যাবে,
হীম শীতল ঠান্ডা;
শরীরের গিঁটে গিঁটে বাত ব্যথা হবে,
বুকে ধূক-ধূকানী কাশি হবে,
রাতে ঘুম হবেনা,
যন্ত্রনায় কাতরাবো।
শীত এখনো আসেনি,
যদি শীত আসে তবে আমি এবার বুঝতে পারবো
খুব বুঝতে পারবো..
         ****