শীতের পরসে পরিছে মনে সেই গোধুলী বেলা,
হেমন্তের শেষে তুমি আর আমি নন্দিগাঁয়ের মেঠো পথচলা,
মনে আছে তোমার?
যখন ধবল বকেরা নীড়ে ফেরার জন্য ডানা মেলেছিল সুনীল অম্বরে,
ঝাঁক বেঁধে শালিকেরা কিচির মিচির শব্দে ছুটে চলছিল,
দুধারে তাল গাছে আশ্রয় নিতে ব্যস্ত বুনো পায়রাগুলো।
তুমি আর আমি প্যারালাল হাঁটছিলাম নির্বিঘ্নে,
কৃষাণের কণ্ঠে তখনও ভেসে আসছিল পল্লিগীতির সুর,
তুমি বলেছিলে এ পথ যদি শেষ না হতো,
চলনা অজানা কোথাও হারিয়ে যাই;
তোমার মনে আছে অনন্যা?
জানি মনে রাখবার কোন প্রয়োজন একেবারই নেই।
শুনেছি বড় সুখেই আছ নগরের স্বপ্নিল ভিলায়,
সুখের স্বপ্ন বুনে চলেছ, যান্ত্রিক শব্দের মায়াজালে।
শহরের ইট পাথরে গড়া সুরম্য অট্টালিকায় তোমার বাস,
চলমান সিঁড়িপথ বেয়ে শপিং মলে তোমার অবাধ বিচরণ,
গোলাকার কালো চশমায় তোমাকে এখন চেনা দায়।
আমি এখনো নন্দিগাঁয়ের ধূলো মাখি গায়,
এখনো শুনি কৃষাণের কণ্ঠে সেই মেঠো গান,
মাঝির উদাসী সুরের ভাটিয়ালি,
চলি ঘামে ভেজা শরীরে চালানো ভ্যানে অথবা পায়ে হেঁটে।
আমার আজো মনে আছে, স্পষ্ট মনে আছে,
নদীর পাড়, নন্দিগাঁয়ের সেই মেঠো পথ,
কুড়ি বছর আগে তুমি আর আমি কাটিয়েছি কত সময়,
বুনেছি হাজারো রঙিন স্বপ্ন।
আর কখনো ফিরে আসবেনা সেই সোনালী দিনগুলো,
তবু স্মৃতিগুলো ভেসে উঠে আঁখিপাতে,
তুমি ভুলে গেলেও আমি ভুলিতে পারিনা কোন মতে।
***