ভ্রমরের গুঞ্জন, কোকিলের কুহুতান হয়তো আগের মত নেই,
তবু বসন্ত আসে, বাগিচা পুষ্পিত হয় বাহারী ফুলে,
শীতের গাঢ় কূয়সা কেটে সোনালী রোদ তেজ দেখায়,
শিমুলের পাতা ঝরে, মুকলিত হবার প্রত্যাশায় আম-লিচু আর কাঁঠাল গাছগুলো।
সবুজ রবিশস্যের ক্ষেতে সোনালী রোদের ঝলক,
পদ্মার নীলজল বয়ে চলে নিঃশব্দে অবিরল।
মৃদু বায়ু পরস বুলিয়ে যায় ঠিক অনন্যার সুগন্ধময় নিঃশ্বাসে মত,
দারুণ বিমোহিত হই,হারিয়ে যাই সুদুর অতীতে।
লাল টকটকে শিমুল ফুল খোঁপায় গুঁজে -
কিশোরী সাজে বসন্ত বরণে নিষ্কলুষ হাঁসি মুখে
যদিও গন্ধ বিলায়না তায়,
বিনামূল্যে পাওয়া তাই,
কি হবে গোলাপ রাজনিগন্ধ্যায়!
এ যে আমারই বাংলার অপরূপ নৈবেদ্য।
ঘুঘু দম্পত্তি খড়কুটো ঠোঁটে নিয়ে বাসা বুননে ব্যস্ত
কাঁঠাল গাছের মগডালে কাছাকাছি বসে হালকাসুরে ডেকে যায়,
ভালোবাসা উৎসারিত করে একে অপরে।
খুব মনে পরে, এমনি বসন্তের এক স্নিগ্ধ বিকেলে,
পদ্মার ব্লকে বসে অনন্যা আমাকে বলেছিল -
তুমি হারিয়ে যাবেনাতো,
যেমন করে দু'মাসেই হারিয়ে যায় বসন্ত?
আজ বড্ড সেই কথাগুল মনে পরে,
বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, তুমি কি সত্যি বলেছিলে?
নাকি সে ছিলো তোমার অতি আবেগের মিথ্যে বহিঃপ্রকাশ।
তারপর বহু বসন্ত চলে গেলো,
বাগিচা পুষ্পিত হলো, কোকিল ডাকিলো,
শিমুল বৃক্ষে লাল টকটকে ফুল ফুটিল,
শুধু আমার বসন্তে তুমি হারিয়ে গেলে অচেনা নগরে,
আর আমি খুঁজে বেড়াই অহর্নিশি তোমার সেই প্রশ্নের উত্তর।
          ***