কুষ্টিয়া- ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিনে,
পাংশা মৈশালার সুবিস্তৃত ফসলের মাঠ,
চোতের খা খা রোদ সবুজ ভূট্টা খেতে ঠিকরে পড়ছে,
কয়দিন আগেও নিচু জমিনে পানি জমেছিল
লাল শাপলায় ছেয়েছিল নান্দনিক সৌন্দর্যে,
দক্ষিণের রাস্তাদিয়ে যাবার বেলায় পথাচারী অবাক তাকিয়ে থেকেছে অপলক,
দেখেছে অতিথি পাখির আনাগোনা আর জলকেলি।
কলেজ পড়ুয়া তরুণ -তরুণী তুলে নিয়ে গেছে কিছু লাল শাপলা;
ছিপ হাতে শিকারি ধরছে কই জিয়ল মাগুর ,
কানি বকেরা চুপটি করে তীক্ষ্ণ ঠোঁটে বড় তৃপ্তি নিয়ে খায় পু্টি,
মানুষের আনাগোনায় অতিথি পাখিরা ঝাঁক বেঁধে এদিক সেদিক ছুুটোছুটি করে,
ওদের কলকাকলিতে অপূর্ব ঝঁংকার তোলে বাতাসে।
লোলুপ শিকারির বন্দুকের বুলেট গর্জে উঠে,
অব্যর্থ দক্ষ হাতে নিশানায় বুলেট বিদ্ধ করে,
এক জোড়া চখা-চখি লুটিয়ে পড়ে ভেজা স্যাঁতসেঁতে জমিনে,
বুকের গরম রক্তে ভেসে যায় মাটি।
তীব্র শীত আর বেঁচে থাকবার জন্য সামান্য খাবারে প্রত্যাশা নিয়ে এসেছিল,
এসেছিল হাজার হাজার মাইল পথ ডানায় ভর করে,
শীত কমে গেলে আবার ফিরে যাবে আপন ঠিকানায়।
ফিরে আর যাওয়া হলোনা ওদের সেই বরফঢাকা আবাসে।
শুধু স্মৃতি হিসেবে পরে আছে ভেজা মাটিতে বুকের তাজা রক্ত আর খুলে ফেলা পালক,
রসনা বিলাসে মাংশগুলো টগবগ করে সুস্বাদু মসলায় সেদ্ধ হয় যান্ত্রিক চুলায়।
স্বপ্নগুলো নিমিষেই নিঃশেষ হয়ে যায় চখা-চখির,
যেমননি করে নিঃশেষ হয়েছিল আমার স্বপ্নগুলো বহু আগেই,
রক্তক্ষরণ হয়েছিল কিন্তু জমিনে পড়েনি
পড়েছিল বুকের পাঁজরে,শক্ত পাথরের মত জমাট বেধে আছে,
যা দেখা যায়না,
দেখানোও যায় না।
***