চন্দনার পাড়ে সগৌরবে পাংশা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ,
সহস্র সহস্র শিক্ষার্থীর পদভারে মূখরিত অঙ্গন,
যেখানে কেটেছে দুরন্ত কৈশোর আর যৌবনের ছয়টি বছর।
সোনালি দিনগুলো এখনো স্বপ্নের মত চোখে ভাসে
কতবার ছুটে গেছি মায়াবী টানে, নগ্ন পায়ে হেঁটেছি সবুজ ঘাসের মাঠে,
সকালের শিশিরে ভিজেছে পা,
ছুঁয়ে দিয়েছি সেই পুরনো দেয়াল,
চেয়ে দেখিছি সেই স্বচ্ছ জলের পুকুর, নারিকেল গাছ।
সবই আছে, শুধু নেই হাত ধরে চলা সেই সতির্থ বন্ধুজন,
অজস্র সুখ-দুঃখের ম্মৃতিগুলোই শুধু মনে পরে।
তারপর কেমন করে যে পেরিয়ে  গেছে আড়াইটি যুগ একদম বুঝতে পারিনি,
চলতে পথে স্রোতস্বিনী যেমন করে তার গতিপথ নরম মাটির ভাঙ্গনে পরিবর্তন করে
ঠিক তেমনি করে করে চলেছে জীবনের সরণি ।
বহু পথ মারিয়ে আবার ফিরে আসি যৌবনের হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির চত্বরে,
অবাক বিষ্ময়ে দেখি তার নবরূপ,
অধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় সজ্জিত এক অমরাবতী,
খুঁজছিলাম শশ্রুমণ্ডিত কৃষ্ণ বর্ণের চাচার ক্যান্টিনকে,
হাঁটছিলাম মন্থর গতিতে, পাশের সরু গলিপথ থেকে বেড়িয়ে এলো এক অপ্সরী,
গভীর তন্ময়ে দেখছিলাম তার ছান্দিক হেঁটে চলা,
ঈশ্বরের শৈল্পিক হাতে গড়া নন্দিত কারুকার্য খচিত মানবী,
পায়ে হাই হিল, কোমড় বাঁকিয়ে সামনে চলতে থাকে চঞ্চলা হরিণীরূপী।
শুধু একবার কি এক অজানা কারণে পেছন ফিরে তাকালে,
অবাক বিষ্ময়ে হতবাক আমি,
যাকে খুঁজেছি আড়াইটি যুগ পথে প্রান্তরে অবিরাম,
আজ আমি বড় ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত পারজিত সৈনিক,
অথচ সেই অনন্যা আজ আমারি দৃষ্টি সীমার নাগালে স্মিত হাসিতে অপলক চেয়ে,
বধির শিশুর মত আমি নির্বাক।

সদ্য জীবন্ত লাল টকটকে সিঁদুর পরা গোটা সিঁথিতে।
চাচার ক্যান্টিন এখনো আছে অথচ সেই চাচা নেই,
অনন্যাও আছে কিন্তু সেই অনন্যা আর নেই।
লাল টকটকে টাটকা এক চিলতে সিঁদুর চীনের প্রাচীরসম দেয়াল ফেলে দিয়েছে,
যা ভেদ করার সাধ্য আমার একেবারেই নেই।

        ***