কলেজ পড়ুয়া ছেলেটার বয়স কত হবে ?
বিশ/একুশ বছর পেরিয়েছে হয়তো,
কিংবা তার চাইতে একটু বেশি ।
সেদিন অধিকার আদায়ে মুখরিত মিছিলে
রাজপথ কাঁপিয়েছিল সে,
মিছিলের অগ্রভাগে দেখেছিলেম তারে ।
তারুণ্যদীপ্ত লড়াকু সেনাপতি !
শোনেছি, কন্ঠে তার বারুদমাখা বজ্রধ্বনি ।
আহা ! কি তার ভোকাল
কিযে তার দাপাদাপি
কিযে তার দুঃসাহস !
তার সুতীব্র হুঙ্কারে
মনিবের সিংহাসনও কেঁপেছিল বুঝি ?
সেদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে
মিছিলে সামিল হয়েছিল সে,
তারপর সেতো ফিরছিল আপন ঠিকানায়,
হয়তো মায়ের কোলে !
ফেরার পথে ছদ্মবেশী ভাড়াটে ঘাতক
অনুসরণ করছিল বুঝি তাকে ।
সেদিনের পর থেকে
আর দেখা যায়নি ছেলেটাকে রাজপথে,
অনেকদিন নিখোঁজ সে ।
বাসায় আরতো ফেরা হয়নি তার ।
অতঃপর একদিন নদীর কালো জলে
ভেসে ওঠে অজ্ঞাত লাশ ।
খবর শোনে ছুটে আসে
লাশবাহি গাড়ি,
টেনে তুলে লাশটাকে নেয়া হল মর্গে ।
দেখে বুঝা গেল, এতো সেই অগ্নিস্ফূলিঙ্গ,
যাকে অকালেই থামানো হলো
অগোচরে গলা টিপে ।
শত আঘাতে জর্জরিত মাথা,
মুখটাও থেতলানো ছিল তার ।
রক্তের নহর কবেই মিশে গেছে
বহতা নদীর কালো জলে ।
যার অপেক্ষায় ক্লান্তিহীন বসে আছে মা...
সেতো অবচেতনে শুয়ে আছে মর্গে,
দেহটা জমা আছে লাশকাটা বরফের ঘরে ।
বুক ফেড়ে দেখা হবে
আর কোথায় আঘাত লেগেছে তার ।
কিছুক্ষণ পরে বুকটা চিড়ে
হৃদয়টা বের করে দেখতে পেল,
কোন আঘাত লাগেনি তাতে ।
এই ছেলেটা সেদিন মিছিলে ছিল
সবার আগে দুঃসাহসে ।