যে সমুদ্র এক সময় আমাকে পাগলের মতো টানতো,
আজকাল যখন সে সমুদ্রের কাছে সময় সুযোগ মিলে গেলেও
আগের মতো যখন তখন ছুটে যেতে ইচ্ছে করে না,
তখন বুঝতে পারি বয়স হয়েছে আমার।
ছোটোবেলায় যে সবজি কখনো ছুঁয়েও দেখতাম না,
আজকাল সে সবজি; মানে তিতা করলা বা উচ্ছে ভাজা
একমুঠো গরম ভাতের পাতে থাকলে মন থেকে সন্তুষ্টি আসে যখন,
তখন বুঝতে পারি বয়স বেড়েছে আমার।
এইতো কিছুদিন আগেও যখন আমার পুবের জানালা ছুঁয়ে ভরা যুবতী চাঁদের আলো
আমার বিছানায় লুটোপুটি খেতে খেতে আমাকে মমতার আলিঙ্গনে বেঁধে রাখতো,
আমি ভীষণ রকম ভাবে কাব্যিক হয়ে উঠতাম,
জোছনা ছুঁয়ে ছুঁয়ে আনমনে কত শত কবিতার পংক্তি সাজাতাম,
অথচ আজকাল,
আজকাল পূর্ণিমার আলোয় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে,
কাব্যের বদলে যখন রাজ্যের বিরক্তি আসে
তখন বুঝতে পারি বয়স হয়েছে আমার।
আজকাল আর বর্ষার ঝুম বৃষ্টিতে চঞ্চলতা জাগে না আমার ভেতরে,
শীত কুয়াশার পেলবতায় পুলকিত হয় না হৃদয়ের আঙ্গিনা,
শরত হেমন্ত বসন্ত কবে আসে; কবে যায়
এখন আর আগের মতো করে
সে হিসাবও রাখা হয় না।
আমার রঙ বেরঙের সময় গুলো,
আজকাল কেমন যেনো এক রঙা বিষণ্ণতায় জড়োসড়ো।
একটা সময় বালিশে মাথা ছোঁয়াতেই হারিয়ে যেতাম কল্পরাজ্যে,
সেই সব কাল্পনিক সুখে আজও হারিয়ে যেতে চাই মাঝেমধ্যে,
পারি না, আজকাল আর কল্পসুখে তেমন একটা হারাই না।
ঘরে আয়নার প্রয়োজনীয়তা অনুভব না করা আমি,
আজকাল আয়নার সামনে দাঁড়াই রোজ,
দাঁড়িয়ে দেখি বয়সের আড়ালে
তারুণ্য আজ নিখোঁজ।