সেদিন এক আহত হৃদয়ের সংস্পর্শে কাটিয়ে ছিলাম বেশ কিছুটা সময়,
তার চঞ্চলতার আড়ালে দেখেছিলাম মন কেমন করা উদাসিনতা,
ঠোঁটের কোণে হাসি ছিলো ঠিকই কিন্তু ম্লান, আলাপচারিতায় স্পষ্ট হয়েছিলো আহত হৃদয়ের নীরবতা।

তাই জানতে চেয়েছিলাম,

কেনো বেরিয়ে এলে ভালোবাসার সম্পর্ক ছেড়ে?

দূর দিগন্তে তাকিয়ে আনমনে তার ছোট্ট জবাব,কষ্ট পেয়েছিলাম।

এতো বছর পর এই কেবলই কষ্ট পেলে? আমি আবার প্রশ্ন রাখলাম।

এক চিলতে হাসির ওপাড়ে দীর্ঘ নিশ্বাস লুকিয়ে ফের তার ছোট্ট জবাব, না; কষ্ট আরও পেয়েছিলাম।

আমি আরও উৎসুক হয়ে উঠছিলাম; বললাম- তো? তবে এতোকাল কেনো ছাড়োনি সম্পর্কের বাঁধন?

কেমন যেনো একটু হাসি ঠোঁটে । না তৃপ্তির না তাচ্ছিল্যের বুঝে ওঠার আগেই তার সাবলীল উত্তর,সম্পর্ক কি এতোই ঠুনকো যে সহজেই ছেড়ে আসা যায় !  ছোট ছোট খুনসুটি, মান অভিমান লুকোচুরি
এসব নিয়েই তো সম্পর্ক হেঁটে চলে ক্রোশ ক্রোশ পথ পেরিয়ে।  

আজ কেনো তবে; শূন্যতার ঘরে নিজেকে দিয়েছো সঁপে? তীরের বেগে আবারও প্রশ্ন ছুঁড়ে অপেক্ষা করছিলাম কেমন জবাব আসে তা শুনবার।

আকাশের দিকে তাকিয়ে অনেকটা ইচ্ছার বিরুদ্ধেই যেন আচমকা বলে উঠলো, সব কেনো'র জবাব সব সময় দিতে নেই।

বললাম- তাতে হালকা হওয়া যায়, আমাকে বলতে পারো নির্দ্বিধায়।

আকাশে রাখা দৃষ্টি এবার অবনত হলো। বুক ফাটা দীর্ঘশ্বাসে জানালো,সব ব্যথা হালকা হয় না।

তাহলে ভালোবাসা? প্রশ্ন ছুড়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলাম।

বেশ অনেকটা সময় নিয়ে বড্ড শান্ত কণ্ঠে জানালো, ভালোবাসা কখনো মরে না।

আমার উৎসাহ আরও বেড়ে গেলো। ভালোবাসো তাকে?  আজও, এখনও? আবার জানতে চাইলাম।

বিরক্তিহীন কণ্ঠে বেশ যেনো তৃপ্তি নিয়েই দিলো এর জবাব।আমার ছাদ পেরিয়ে রোদ উঠোনে যে নিয়েছে ঠাঁই, শূন্যতাদের ভিড়েও কেবল তাকে খুঁজে পাই।

অদ্ভুত! সত্যিই বড় অদ্ভুত লাগছিলো আমার।

আমার চোখে চোখ রেখেই বললো,তা কেনো?

বললাম- সূতো কাটা ঘুড়ির মতো সম্পর্কের সূতো কেটে তুমি আজ একাকিত্বের বাহুডোরে, অথচ...

আমাকে থামিয়ে আবারও তার শান্ত জবাব-সব মেঘে যেমন বৃষ্টি হয় না, সব বাতাসে যেমন ঝড় ওঠে না ঠিক তেমনই সব সম্পর্ক স্বীকৃতি খোঁজে না।

বুঝলাম আর কোনো প্রশ্ন করাটা অবান্তর। মুচকি হেসে বললাম- বেশ তাই হোক তবে, এমন নিষ্ঠা এই ভবে কে দেখেছে কবে !

এবার তার কণ্ঠে দৃঢ়তা। দৃঢ় কণ্ঠেই বললো- কিছু কিছু সম্পর্ক এমনিই টিকে থাকে,শুধু একে অপরের শুভ কামনাতেই অনাদিকাল  বেঁচে থাকে।