রেলের ধারে বসে বিড়ি ফুঁকছে আনমনে সে,
আর ঘাসপাতা দেখছে,
একটু বুড়িয়ে গেছি বলে আমাকে কাজটা দিলনা?
আমার এখনও শক্তি আছে একশ ইট এক ঠেলাতে নেবার,
আনমনে বলে সে।
কিন্তু ভাংগা পড়ে যাওয়া চাপা, আর ক্ষয়িষ্ণু শরীর
সে ইংগিত দিচ্ছিলনা,
এক ঠেলায় একশ ইট?
এ অসম্ভব তা সেও জানে।
ঘরে ফেরবার সাহস নেই,
ফিরলেই সারাবেলা না খাওয়া ছেলে দুটো
ক্ষুধার্ত বাঘের মত ঝাপিয়ে পড়বে খাবারের জন্যে,
আর ওদিকে তিন-চারদিনের না খাওয়া বউ,
এক কোণে জীর্ণভাবে পড়ে কাঁদবে,
কদিন ধরে কাঁদবার শক্তিটুকু নেই,
ঘরে আবার নতুন অতিথি আসছে
স্ত্রীর পেটে তৃতীয় সন্তান,
একটা মেয়ের বড় শখ ছিল যে, তাই
কি দিয়ে সে নুতন অতিথিকে স্বাগত জানাবে?
ভাংগা ঘর, কিছু উপোস বেলা?
তাকে পড়াবার মত
একটা ছেঁড়া ন্যাকড়াও তো ঘরে নেই!
এসব ভাবতে ভাবতে বিড়িটা হাতেই পুড়ে শেষ হয়, খাওয়া হয়না আর।
পকেটে আর বিড়িও নেই,
একটা ফুটো কড়িও নেই যে বিড়ি কিনবে,
ওদিকে আবার বিড়িরও দাম বেড়েছে।
মনে মনে সে একটা ট্রেন আসবার অপেক্ষা করছে,
আসলেই যদি ঝাঁপ দেওয়া যেত!
না ওত সাহস নেই!
কেন জানি এই পচা ঘুণে খাওয়া
জীবনটার প্রতিও এক ধরণের মায়া কাজ করে!