পরিত্যক্ত বাড়ীটা
মনোতোষ কুমার মজুমদার
বাড়ীটা নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে এক বুক ইতিহাস নিয়ে।
খাঁ খাঁ করছে তার শূন্য বুক, প্রাণহীন খাঁচা।
অব্যক্ত কান্না বুকে নিয়ে বাড়ীটা দাঁড়িয়ে আছে অন্তহীন অপেক্ষায়।
চেনা মানুষ গুলো ছেড়ে চলে গেছে অনেকদিন।
ইঁদুর-বাদুর আর পেঁচার সঙ্গে বন্ধুত্বে তার অতীত ভুলবার প্রয়াস।
স্যাঁতলানো দেওয়াল আর জংলী উঠোনে গুমোট গন্ধ।
ফেরীওয়ালা শুধোয় –
কেউ বাড়ী আছেন?
কম্পিত্ প্রতিধ্বনি উত্তর খুঁজতে খুঁজতে থেমে যায় একসময়।
পড়ন্ত পাতায় সরীসৃপেরা শুধু জানান দেয়।
যাদের থাকার কথা তারা আজ নেই কেউ।
কোথাও নেই।
নীরবে চোখের জল ফেলে পরিত্যক্ত বাড়ীটা।
শূন্য ঘর, শূন্য বারান্দা, শূন্য উঠোন -
ঘুলঘুলিতে শালিকের বাসা।
পরিত্যক্ত বাড়ীটায় আজ মাকড়সাদের অধিকার।
কেটেছে কাল এমনি করে বহুদিন।
হয়ত আরও কতকাল কাটবে এমনি করে।
খসে পড়বে ইঁট একটা একটা করে স্খলিত পাঁজরের মত।
তবু চাহনিতে থাকবে আশা –
আসবে , তারা নিশ্চই আসবে যাদের আসার কথা।
তারা যে আসবে বলে কথা দিয়েছিল।
একদল আছে যারা কথা দিয়ে কথা রাখে।
আর একদল আছে যারা কথাটুকুই দেয়।
আর নীরব বাড়ীটার মত একদলের শুধুই অপেক্ষা –
কেউ কথা রাখুক বা না রাখুক।