পান্নালাল প্যাটেলের গল্প অবলম্বনে
অদল-বদল
মনোতোষ কুমার মজুমদার

জীবনের এক হিসাব।
অমৃত আর ইসাব।
করল এমন করে-
গাঁয়ে কাঁটা ধরে।
পড়শি দুই ছেলে গাঁয়ের স্কুলে পড়ে।
গলায় গলায় ভাব তাহাদের যেন মানিকজোড়।
পণ করেছে এমনি অটুট থাকবে জীবনভোর।
হিন্দু ছেলে অমৃত আর ইসব মুসলমান।
একজনার দুঃখে কাঁদে অন্যজনার প্রাণ।
ধর্ম নামের অধর্মের চলছে যখন খেলা।
এক মানুষে আর এক মানুষ করছে অবহেলা।
মনবতা ভুলে মানুষ পশুরমতো চলে।
সেই খনেতে একী কাণ্ড ঘটাল দুই ছেলে!
জাত-পাত আর ধর্ম-অধর্ম বোঝেনা যে তারা।
তাদের কাছে সবই সমান আকাশ-গ্রহ-তারা।
এক পৃথিবীর তলে সবাই এক সৃষ্টির দান।
তবু মিথ্যা বিভেদ জিগির তুলে কাড়ছি সরল প্রাণ।
যে জামাটা ইসাব কেনে অমৃতেরও তা চাই।
অসীম টানের একী খেলা ভাইয়ের জন্য ভাই।
খেলতে গিয়ে ইসবের জামা যখন ছেড়ে।
মারের ভয়ে প্রাণে তখন শিরশিরানি ধরে।
এগিয়ে আসে অমৃত হয়যে জামার অদল-বদল।
জামা সেতো জামা নয়ত ছন্দ জীবন মাদল।
সেই ছন্দই ভুলছি মোরা আমরা বড়ো যারা।
ভগবান আর খোদার মাঝে প্রাচীর তুলি তারা।
বাবা হাসান যখন এসব সবিস্তারে শোনে।
ইসাব সাথে অমৃতেরে নেয় যে বুকে টেনে।
এক ছেলে নয় এমনি একুশ পালতে যে সে পারে।
বাহা বৌদির কাছে গিয়ে এমনি মিনতি করে।
পড়শি তারা বহু দিনের  মুখোমুখি ঘর।
হয়তো ছিল পাশাপাশি কিন্তু ছিল পর।
আজকে কানে আসছে ভেসে আনন্দেরই গান।
মন্দিরের ঐ ঘন্টা ছন্দে সুরেলা আজান।
অমোঘ মৃত্যু একদিন ঠিক ছিনিয়ে নেবে জানি।
তবুও কেন এই জীবনে রক্ত হানাহানি।
এক আকাশের তলে সবাই এক সে মোদের ভূতল।
শিক্ষা দিল অমৃত আর ইসাবের এই যে অদল-বদল।