আমি রূপসী বর্ষা দেখেছি।
বৃষ্টিতে ভিজে ঘাস-পাতাকে গাড় সবুজ হতে দেখেছি।
আমি বর্ষাকে বন্যা হয়ে গাঁ- গ্রাম,জনপদ ভাসিয়ে
সর্বহারা করে দিতে দেখেছি।

আমি চন্দ্রশালায় বসে
চন্দ্রকরের শোভা সারা ছাদ জুড়ে
হেসে খেলে লুটিয়ে পড়তে দেখেছি।
একই জ্যোৎস্না রাতে কারো জীবনের মিলন মেলা
ভেঙে যেতে দেখেছি।

আমি শীতল শান্ত নদীটির
নিরবধি বয়ে চলার কুলু-কুলু কলতান শুনেছি।
আবার নদী ভাঙনের গ্রাসে হাজারও গৃহহারা নর-নারীর
বুক ফাটা কান্না শুনেছি।

আমি ফসলে ভরা দুর-দুরান্তে দিগন্ত ছোঁয়া,
চোখ জুড়ান সবুজ সবুজ মাঠ দেখেছি।
আমি প্রান্তিক বর্গা-চাষির সারা পরিবার,
অভুক্ত থাকার ক্লিষ্ট মুখ দেখেছি।

আমি পৌষের শীতের রাতে
কোমল পশমি উষ্ণতার সাথে
কারো কোমল বাহুর উষ্ণতাতে,
কাউকে কাউকে উষ্ণ হতে দেখেছি।
একই পৌষের শীতে-
খোলা আকাশের নীচে, আবালবৃদ্ধবনিতাকে
জঞ্জাল পুড়িয়ে উত্তাপ ছড়িয়ে জড়সড় কুঁকড়ে,
উষ্ণ হবার ব্যাকুল প্রয়াস দেখেছি।

গাড়ী,বাড়ি, প্রাসাদ, রঙিন বাতি, সুরার আসর,
কারুকার্য খচিত আসবাবপত্র,
বাহারী বস্ত্র, বহুদামি আহার,
ভুরিভুরি অপচয় আর কত কত উচ্ছিষ্ট,
ফেলে দেওয়ার বিলাসিতার
পচা সমাজকে দেখেছি।
আবার কত শত ক্ষুধার জ্বালা
আর নির্যাতনে ঝলসে নীল হওয়া
কিশোরী গৃহকর্মীর শবদেহ দেখেছি।

তাইতো পারিনি। ভালবাসতে পারিনি।
বারে বারে ফিরে আসা তোমাকে
পারিনি ভালবাসতে পারিনি।