রুপ টা তাহার সাগরের মতো কিন্তু নয় সে সাগর কিংবা নদী,
দেখতে অতি বৃহৎ তাই জনশ্রুতে নাম তার খোয়া সাগর দিঘী।
এপার হতে ওপারে দৃষ্টি সীমাহীন তাই সব দেখা যায় যেন কুয়াশার মতো,
আঞ্চলিকতার ভাষায় কুয়াশা কে বলে খোয়াশা, আছে অভিমত সহস্র শত।
বসবাস তার দালাল বাজার লক্ষ্মীপুর জেলার সদরে,
প্রায় তিনশ বছর গৌরবে তার দিন কাটে সমাদরে।
সদা বুক ভরা জল করে টলমল ঢেউ বহে রাশি রাশি,
দিনে খেলা করে তাতে সূর্যের আলো রাতে চাঁদের হাসি।
দক্ষিণ কুলের দখিনা বাতাস বহে যবে উত্তরে,
উত্তর দিক হতে প্রতুত্তর আসে ভালোবাসা প্রাণভরে।
পশ্চিমে ছিল একদা অনেক বেল গাছ, সেই বেল গাছের নিচে,
একাত্তরে পাক হানাদার আর রাজাকারেরা মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি করে তাহাদের লাশ পুঁতে রাখতো ঐ মাটির নিচে।
এখনো সেই দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার আত্মত্যাগের আত্মগৌরবের সুর,
বেল গাছ হতে ছড়ায় চারিদিকে প্রাণে প্রাণে হাসে কাঁদে বিরহ বিধুর।
সেদিন বিকেলে ভ্রমণ ছলে গিয়েছিনু দীঘির পাড়ে,
দেখিনু হেথায় তরুণ তরুণী কপোত কপোতী বসিয়া তার চারিধারে।
করছে গল্প অল্পস্বল্প হাসে গায় প্রাণ খুলে,
উদ্যম কিশোরেরা অতি উদ্যমে সাঁতার কাটে দীঘির স্বচ্ছ জলে।
যারা তাদের এনে দিলো নির্ভয়ে চলা, নির্ভয়ে কথা বলা, ইচ্ছেমতো সাঁতার কাটার স্বাধীনতা,
তাহারা কি কখনো শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় করে স্মরণ এই বেলতলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কথা?
যে জন করলো সৃজন এই দীঘি মানুষের তরে, দিয়ে নিজের অর্থ আর শ্রম,
কেউ কি তাকে রেখেছে স্মরণ অতি শ্রদ্ধায় তার নাম?