***বিরহ ঘন্টা ***
                   -SHANTANU MONDAL

সেদিন হারানোর যন্ত্রণায়
ধুঁকছিল তোর প্রাণটা ,
সারাক্ষণ নানা কাজের মাঝে
বারে বারে মনে পড়ছিল প্রেমিকের
দুবাহুর আলিঙ্গন আর ঠোঁটে, গালে
কপালে আলতো ও গভীর চুম্বনের
রগরগে স্মৃতির ফ্ল্যাশব্যাক ;
হাতে হাত রেখে শিকলের মতো
জড়িয়ে পথ হাঁটা ,কখনও বা থমকে দাঁড়িয়ে
মুখের দিকে চেয়ে অবাক হয়ে একটু হেসে
আবার এগিয়ে চলা -

আরো কত কেটে যাওয়া ক্ষণ
পুকুর পাড়ে গাছতলায় ,কোলে
কিংবা কাঁধে মাথা রেখে ---
সবই দিবা স্বপ্নের মতো !

ধীরে ধীরে রাত নেমে আসে
স্মৃতির মালাগুলো কাঁটার ছড়ি হয়ে
বুকে মারে নিষ্ঠুর আঘাত ,
এতো মার খেয়ে কি আর বেরিয়ে আসে -
বিছানায় চাদর ঢাকা বোবা কান্না ছাড়া !
মুখ থেকে আওয়াজ না বের হলেও 
নরম তুলোর বালিশ টা
জমাট বেঁধে যায় উষ্ণ চোখের জলে -
আর বারে বারে অস্ফুটে বলে ওঠে
তোর দগ্ধ মন ,- আমি তোমায় হারাতে চাইনি ,
বিশ্বাস করো আমি এ প্রথম এতো ভালবেসেছি ,
ধন -দৌলত ,রাশীকৃত  ঐশ্বর্য নয় শুধু
তোমাকেই চেয়েছি ,
এ জনমে হলনা তোমাকে পাওয়া !

তারপর বিরহ বেদনা বিষে জর্জরিত
অসাড় দেহটা তোর অজান্তে নেতিয়ে পড়ে ,
ঢুলে পড়ে ভেজা চোখ ,ভেসে যায়
ঘুমের দেশে -আসে স্বপ্ন কিংবা দুঃস্বপ্ন  !

চারিদিক নিস্তব্ধ ,ফ্যানের শির শির
আওয়াজ ,তোর বাবা-মায়ের
নিশ্বাসের শব্দ পাহারা দেয়
তোর মুশারির চারিদিকে -


রাত শেষে ভোর আসে নেমে
হঠাত্ তোর ফোনে বেজে ওঠে
সেই রিংটোন ,বাঁশীর সুর -
ঘুম ভেঙ্গে যায় ,মনে পড়ে চেনা সুর ;
মনের মানুষের কণ্ঠস্বর শোনার
আশায় তুলে নিলি ফোন টা হাতে ,
ভুল ভেঙ্গে যায় অ্যালার্ম টা দেখে !
কি বলবো সে দিশেহারা যন্ত্রণার কথা ,
চোখে আসে জল চুঁয়ে চুঁয়ে ।
সকাল  হয় , সবাই  যখন স্বতস্ফুর্তভাবে
প্রাতরাশে ব্যস্ত  তুই তখন হাতে 
ফোনটা নিয়ে  বাথরুমে চলে গেলি
কাঁদতে , কারণ -বিচ্ছেদের পর
ওটাই তোর  কান্নার জায়গা  ।