মা শব্দ টা যেনো, এক অদ্ভুত জাদুধারী ;
আছে পরম আনন্দ, আর পরম এক তৃপ্তি ;
সব গ্লানি, দুঃখ, কষ্ট, রাগ, দূরে সরিয়ে,
ভালোলাগার সর্বসুখ মিশ্রিত অনুভূতি ।।
মা, তুমি আমার সেই, প্রথম বলা কথা ;
তখনও, তেমনভাবে তুলতে শিখিনি মাথা ।
তোমার হাত ধরে ধরে প্রথম হাঁটতে শেখা,
স্লেট আর পেন্সিলেতে অ-আ-ক-খ লেখা ।।
মা, তোমার সাথেই, স্কুলের প্রথম পরীক্ষা,
লিখলাম আমি ; আর তুমি বাইরে অপেক্ষা ।
ফার্স্ট হলাম যে আমি, ভর্তি করালে স্কুলে ;
তারপর, একাই হেঁটে হেঁটে যেতাম চলে ।।
মা, স্কুল পেরিয়ে এলো কলেজের পালা,
মাথায় তখন পদার্থবিদ্যার সমীকরণ - মেলা ।
তুমি খাইয়ে, চুলে বেঁধে দিতে বেনুনী ;
আর খাবো না বললেই, দিতে আমায় বকুনি ।।
মা, তুমি শুধু ছুটতে, কাজের পরে কাজ ;
কাটা- বাটা- রান্না সেরেই কাপড় জামা ভাঁজ ;
ক্লান্ত তুমি, সন্ধ্যে হলে একটুখানি শুতে ---
উঠেই আবার সবকিছু, একাহাতে সামলাতে ।।
মা, কলেজ শেষে, তখন আমি, ইউনিভার্সিটি ;
তুমি ভেবেছিলে, মেসে আমি, করবো কান্নাকাটি ;
কিন্তু আমি তো তোমারই মেয়ে, একটুখানি জেদী,
স্বপ্ন ছিলো অনেক বড়ো, ঐ মস্ত আকাশ ভেদী ।।
মা, তোমার মেয়ে শিখেছে একা একা থাকতে,
চোখের জল লুকিয়ে রেখে, সবার মাঝে হাসতে ;
দিনের শেষে অন্ধকারে, দুচোখ যখন বোজে,
ক্লান্ত মন এখনও শুধু, তোমার-ই কোল খোঁজে ।।
মা, ব্যর্থতা আর হতাশার সুর ধরছে আমায় ঘিরে,
কতো সব বন্ধু, জেদাজেদিতে, গেলো দূরে সরে ;
কতদিন হলো, তোমার সাথে কথা বলিনি মন খুলে,
তবুও মা তুমি, আগলে আছো, সব অভিমান ভুলে ।।