দিনান্তের পথিক আমি, দিনান্তে যাব ফিরে।
মৃত্যুর ঠোঁট জানি পিদিমের ঢিলে ঢালা ঝলকানি নয়।
অথবা নয় কিংশুক হাসি।
কদম চুমে গ্রহণ করবে কি সে আমায়?
হয়ত তখন আমার লোভাতুর চোখ চলবে খুঁজে
কোন কিরীট ধারী স্যেম্য মূর্তিকে।
জানি বিদায়ের ক্ষণে কোন এক বিলের পানির তলানীতে
কলমী লতার ফুল আমার চোখে উঠবে ফুটে ।
ম্লান চোখের মালিনী হয়ে আসবে আঁধার ঘনিয়ে।
ঠিক সেই ক্ষণে মনে পড়ে যাবে আমার মায়ের দুর্বা নরম
হাতের একটু খানি ছোঁয়া।
কিংবা অধরে বোল তোলা বাবার খোকা ডাকার অহবান।
দিনান্তের পথিক আমি তখন না ফেরার যাত্রী।
ঘাটে সারি বাঁধা নৌকার গলুইয়ে জলের ছলাৎ ছলাৎ আর্তনাদ
অথবা পদ্মা যমুনার পাড় ভেঙ্গে মৃত্তিকা ধ্বসের করুণ আর্তি
তখন হয়ে গেছি আমি।
শঙ্খ চিলের শূন্যে ভাসা ডানা কিংবা পানকৌড়ির ডুব চোরা সাঁতার
তখন আমার প্রাণের চাতালে ভাসবে ছবি হয়ে ।
কে যেন তখন বলবে আমায়, সময় হলো, চলো এবার।
বলব আমি, একটু দাঁড়াও, এই খানে এই বাংলায়
সিরাজ মরেছে বীর দর্পে, শেষবার দেখে নেই তার স্মৃতিটুকু।
বাঁশের কেল্লার বীর শহীদান ভারত মাতার জন্য হয়েছে বলিদান।
তাঁদেরও নিয়েছ তুমি সহযাত্রী করে।
আমি তো দিনান্তের তুচ্ছ যাত্রী।
ভেবনা আমি পালাব তোমায় ফাঁকি দিয়ে ।
আমার যাত্রা হবে শুরু।
তখন আমার বুকের বয়ন শিল্পে তাঁতের জমিন পুরোন হবে।
মৃৎ শিল্পের উঁই পোকার ঘরে তখন চলবে আমার সুতো কাটার
সূক্ষ হিসাব।
আমি সেই তাঁর কাছে করব আমার অত্মদান।
বলব আমি তাঁকে, হিংসা দ্বেশ সব ছেড়ে চলে এসেছি আমি।
শুকনো তুষের অনলে আমার অন্তর পোড়া।
হে উঁই ঘরের মালিক, তোমার রাজত্বে আমি নগন্য এক,
দয়া করে আমাকে তুমি পরিওনা হাত কড়া।
মোঃ মজিবুর রহমান
উত্তরা, ঢাকা।
১৫-০৩-২০১৫ ইং।