শো শো বাতাস বইয়া কত দূরের দিশায় লয়ে যায়
খোলা মাঠের ছোট্ট বাড়িতে ফুপিয়া কাঁদে মায়
মাঝির ক্রন্দনে উত্থিত হাহাকারে বিষণ্ণ চারিদিক,
গঞ্জ ছাড়িয়া খবর মাঝ দরিয়ায় পৌঁছে গেছে ঠিক
সব ছেড়ে ছুড়ে আসিয়া যখন বসিল ঘরের বাটে,
ছেলে তারে ছাড়িয়া চলিয়া গেছে দূরের এক ঘাটে
মাস দেড়ে আগে দেখেছিল সেই সোনা মুখ খানি
নিয়ে এসেছিল হাড়ি ভরা মাছ আর লজেন্স দুখানি
দেখিয়া খোকার আনন্দের কতই না ছিল বাহার
কে বুঝেছিল বাজান রে সে দেখিতে পাইবে না আর?
এমনি করিয়া স্মৃতির মধ্যে কত সময় কাটিয়া গেল,
প্রতিবেশী রহিম কহিল ছেলেরে বিদায় দিয়া ফেলো
পরে মাঝি আনিতে গেল ছেলেরে রাখিবার খোল,
খোকা ছাড়িয়া চলিয়া গেল মায়ের নীরব সেই কোল
বাজান রে শোয়াইবার সময় যখন দেখিল পা দুখানি,
মনে পরিল আঁচর সে পায়ে লাগতে দেয়নি এতটুকুনি
দাফন দিয়া ধুক করিয়া উঠিল তাহার বুকের কোনে
টিন হীনা বিধ্বস্ত বাড়িটির ছবি জাগিল তাহার মনে
এবারের ঝড়ে উজাড় হইয়া গেল কত লোকের বাড়ি,
গ্রাম জুড়ে শোনা যায় শুধু যুবক-বৃদ্ধের আহাজারি
প্রতিবারই প্রকৃতি হইয়া ওঠে এমন করিয়া যেন ক্ষুব্ধ
গ্রামবাসীর চলে জীবন-মরন অক্লান্ত এক মহা যুদ্ধ।