জয়নগরের মাটিতে যেন রয়ে গেছে এক চিরকালীন গন্ধ,
যা সময়ের পথিক হয়ে স্পর্শ করেছে ইতিহাসের আদিগন্ত প্রান্তর।
সেই মাটি, যেখানে প্রথম বৃষ্টি পড়েছিল সৃষ্টির আদি পঙক্তিতে,
আর কালের স্পন্দন রচিত হয়েছিল সভ্যতার প্রাচীন শিরোনামে।
মেসোপটেমিয়ার দোদুল্যমান নদী,
মিশরের পিরামিডের নিস্তব্ধ শিখর,
হরপ্পার নিখোঁজ রাজপথ
সবই যেন এক অমোঘ সুর হয়ে বেজে ওঠে জয়নগরের বুকের গভীরে।
সেই সুরে আমি এক নিঃসঙ্গ পথিক,
যার ভালোবাসা একপাক্ষিক, অপ্রাপ্তির শিকলে বাঁধা।
যেমন ইতিহাস ভালোবাসে তার জন্মের প্রত্যেকটি ক্ষণকে,
তবু ছুঁতে পারে না একবারও।
প্রাচীন অ্যাসিরিয়ার রক্তাক্ত যুদ্ধের মেঘ,
স্পার্টার তলোয়ারের ছন্দ,
এথেন্সের গণতন্ত্রের সূর্যোদয়
সবই তো কেবল সাক্ষী এক অতল প্রেমের,
যেখানে ছোঁয়া নিষিদ্ধ, কিন্তু ভালোবাসা শাশ্বত।
রোমের কলসিয়ামের প্রতিটি পাথরে
লুকিয়ে আছে এক মর্মান্তিক দীর্ঘশ্বাস,
যেমন হারিয়ে যাওয়া সভ্যতা কাঁদে তার হারানো ঐতিহ্যের জন্য।
আর সেই কান্না, সেই দীর্ঘশ্বাস এসে মিশে যায় জয়নগরের মাটির স্তরে।
তুমি যদি সেই মাটি হতে,
তবে আমি হতাম ইতিহাসের প্রতিটি অক্ষর—
তোমাকে ভালোবাসতে, তবু চিরকাল ছুঁতে পারতাম না।
তোমার বুকের নিঃশব্দ ইতিহাস,
যেন মহাভারতের দীর্ঘ মহাকাব্য,
আর আমি সেই কাহিনীর এক নির্বাক পাঠক,
যার চোখের জল মিশে যায় নীল নদের স্রোতে।
তোমাকে ভালোবাসি ঠিক যেমন ইতিহাস ভালোবাসে সময়কে,
যেখানে মিলন অসম্ভব, তবু বিরহে আছে এক শাশ্বত সৌন্দর্য।