পঁচিশে মার্চ বাঙালি জাতির ইতিহাসে ‘কালোরাত’ বলে অভিহিত,
হায়েনাদের অতর্কিত,কাপুরষোচিত হামলা সেদিন করা যায়নি প্রতিহত।
অপারেশন সার্চলাইট নামে খ্যাত ইতিহাসের এ ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ,
রাত দশ’টার পর দেশজুড়ে শুরু হয় জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড।
নিরীহ,নিরস্ত্র,ঘুমন্ত বাঙালিদের উপর তারা পড়েছিল ঝাঁপিয়ে,
ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে বাংলাকে দিতে চেয়েছিল কাঁপিয়ে।
এই রাতেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী চালায় গণহত্যা,
বধ্যভূমি ও ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে ঢাকা শহরটা।
আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে মানুষের আবাস,
বাংলার পবিত্র মাটিতে পড়ে থাকে অগণিত মানুষের লাশ।
বিভিন্ন শ্রেণি,পেশা ও বয়সের লাশে রঞ্জিত হয় বাংলার মাটি,
পাকিস্তানি হায়েনার দল দুঃশাসন ও নিপীড়নের গড়তে চেয়েছিল চিরস্থায়ী ঘাটি।
শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ ইয়াহিয়া যান এড়িয়ে,
বাঙালি হত্যার নৃশংস নীলনকশা বাস্তবায়নের পথে যান এগিয়ে।
এই রাতেই গ্রেপ্তার হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,
শত্রুমুক্ত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে দেশের মানুষের প্রতি জানান আহ্বান।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন নারকীয় গণহত্যা বিশ্ব আর দেখেনি,
বাঙালি যে অদম্য ,বীরের জাতি ইয়াহিয়া তা ভাবেনি।
পৃথিবীর আর কোন গণহত্যার ছিল না কোন লিখিত আদেশ,
ভয়াল সেই রাতের গণহত্যায় জেনারেল রাও ফরমান আলীর ছিল লিখিত নির্দেশ।
নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল রাতভর,
জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল অগণিত বাড়ি-ঘর।
টিক্কা খান করেছিলেন ঘোষণা,’আমি পূর্ব পাকিস্তানের মাটি চাই,মানুষ চাই না’
তার সেই ‘পোড়ামাটির নীতি’ –ধরেই বাঙালি নিধনে নামে পাকিস্তানি দুবৃত্ত হায়েনা।
আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ তামাদি হয় না কখনো ,
আন্তর্জাতিক আদালতে- এ বর্বরোচিত গণহত্যার বিচার চাওয়ার সময় আছে এখনো।
নৃশংস এ গণহত্যার আদায় করতে হবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি,
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দায় থেকে তবেই পাওয়া যাবে মুক্তি।
উৎসর্গঃনতুন প্রজন্মকে,যারা বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস তথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে জানবে ও নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।