তুমি কি এখনো নদীর মতোই বয়ে যাও?
প্রমত্ত তিস্তার মতো বয়ে চলো অবিরাম
নয়ত খরার সময় বিমর্ষ হয়ে যাও আমার ভাবনায়?
একটা নদী ছিলো আমার!
রোজ সকালে সাঁতার কাটতাম,
দুপুরে সাঁতার কাটতাম,
বিকালে সাঁতার কাটতাম;
আর, রাতে তার বুকে চুপটি করে ঘুমিয়ে থাকতাম।
চাঁদের আলো যখন নদীর বুকে লুকাতে আসতো
তারাগুলো যখন মিটিমিটি হেসে ঢেউয়ের তালে হারিয়ে যেতো
আমি তখন যৌবন হারানোর বেদনা ভুলতে তার কাছে যেতাম।
সেই নদীতে জোয়ার আসতো, ভাটা আসতো,
উজানের ঢলে সেই নদীটা অসময়ে আগ্রাসী হতো
আমি সাঁতরে ওপারে যাওয়ার সাহস দেখাতাম।
সেই নদীটা খরার সময় গুটিয়ে যেতো,
বর্ষায় তার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তো জনপদে;
এখন সেই নদীটা ষোড়শী বেলায় হুংকার হারিয়ে নিস্তেজ।
নদীও তো কথা বুঝে, সময় বুঝে
পাল্টে ফেলতে পারে তার গতিবিধি,
মোড় ঘুরিয়ে সেও হয়ে গেলো ধরলা
আমার নদীটা তিস্তা হতে অকস্মাৎ ধরলা হয়ে গেলো।
এখন তার সারাবছর যৌবন থাকে,
সারাবছর তার মোহনায় নৌকা ভীড়ে।
কেউ কেউ আমার মতো সাঁতার কেটে সময় কাটায়
আর আমি- অতৃপ্ত পিপাসা নিয়ে বসে থাকি
আমার ধরলা যদি কোনদিন আসে
যদি কোনদিন সে এসে বলেই ফেলে,
'ভালোবাসি, প্রিয়ো ভালোবাসি।'
তখন কি আর এত সহজে যেতে দেবো তাকে!