পৃথিবীর বুকে সূর্য এক লাল টুকটুকে
নিগূঢ় শ্যামল মাঝে রক্ত-বৃত্ত আবর্তে
কভু দেখিনি এমনি রূপ যা মোর বাংলাদেশে।।
হাজারো অব্দে শত বর্ণ মিশেছে এই দেশে
হেন উদার বৈচিত্র্য পাবে তুমি মোর বাংলাদেশে।।
সিন্ধু-স্নাত এই পূত ভূমি যেন দ্রষ্টা মূণি
ডেকেছে, মিলিয়েছে সবে, দিয়েছে অভয়বাণী।।
বঙ্গ জলধির এই মহা তীরে সূচিল আর্যতা
দিগন্তে ছড়াল বার্তা, এসে অনার্য করে সাধনা।।
এসেছে ইংরেজ-তুর্কি, এসেছে পারসিক-ফিরিঙ্গি
জিনিবারে এসেছে হয়েছে তব সৌন্দর্যে হত
রূপ তোমার হেরি হে বঙ্গ গাহিল ওরা গীতি
আপন করিয়া নিয়েছে তোমায় এমনি মায়া তব।।
বিস্ময়ে বেবাক বিশ্ব তোমার দুর্মর সংগ্রামে
বিদ্রোহ-চেতনার অস্ত্র তব জানে নিপীড়ক জনে।
মুখের ভাষা লভিল যে জাতি করিয়া রণ
বাংলার বাঙ্গালি তারি নাম বিশ্ববাসী শুন।।
কভু তুমি হে মোর বঙ্গভূমি করোনি কার্পণ্য
দানিলে দু'হাত ভরে সুজল-সুফলের প্রাচুর্য;
মায়াবী ঋতুর এত বাহারি রূপ যে তব অঙ্গে!
মিলিবে না কোথাও হেন যা মোর বাংলাদেশে।।
সহিয়া সকল আঘাত শত বছরের হাসিমুখে
আলিঙ্গনে তব রেখেছো সম্প্রীতি সবারি ধরে,
এমনি মায়া-বাঁধন কি আছে যা মোর বাংলাদেশে?।।
শকুন কিছু খুবলাতে চাহে অঙ্গ তব মাঝেমাঝে
চাহে ওরা ঐক্য তোমার সন্তানের নিতে কেড়ে
হে বঙ্গমাতা সাহসিকা, নিধন কর তাহা বারেবারে
নাহি কোথাও এ মিলনমেলা যা মোর বাংলাদেশে।।
তবে হে মোর জনম-ভূমি, দহি মোর মনে
শোকরানা তব দানের করিল না তব সন্তানে;
তোমার শোণিতধারা জলের করিল ওরা নাশ
প্রাণোৎস তোমার আরণ্যক করিছে ওরা শেষ,
তোমার দেহ-মাটি ওরা বিষিয়ে তুলছে বেশ!
তব শামিয়ানা আকাশ হয়েছে আজি হলদে!
স্নিগ্ধ তব সমীরে দূষিছে ওরা সব পূতি বারুদে!।।
রচনাকাল :- ১১/০৯/২০২২ ইং