জ্যোতির্ময়ের আগমন
-এম নজরুল ইসলাম
**************************
কুল মাখলুকাত ছিল তখন গহীন কালো আঁধারে
ত্রাহি রবে কাঁদছিল মজলুম মানবতা বারেবারে।
নাস্তিক্য, মূর্তিপূজায় ছেয়েছিল বিশ্ব যখন একেবারে
মাতৃজাতি সম্ভ্রম ও অধিকারহারা তখন বিশ্বসমাজে।
কন্যাসন্তানের জীবন্ত সমাধি রীতিমত একটা প্রথা
পথের দিশা ও দিশারীহারা যখন তাবৎ মানবতা।
বিহঙ্গকূজন, ভ্রমরগুঞ্জন, পাপিয়ার ডাক বিষাদভরা
র্নিঝর-নীলাচল, সিন্দু-সরোবর ছিল যে ছন্দহারা।
খোদার সৃষ্টি বিমূঢ় মানব বসেছিল স্রষ্টার আসনে
রোরুদ্যমান ন্যায় যখন অন্যায়-জুলুমের খড়গতলে।
অনাচার আর পশুত্বে ডুবেছিল গোটা মানবসমাজ
উদয়াস্ত ছিল খুন, রাহাজানি, ভয়াল ত্রাসের রাজ।
অহর্নিশ ক্রন্দিছে যখন নিখিলের অনাথ মজদুর
চৌদিকে ধ্বনি ‘আলো দিশারীর আগমন কতদূর?’
সে ক্রান্তিলগনে তুমি-ই এসেছিলে হে জ্যোতির্মান,
মানব তরে, স্থাপিতে সাম্য-ন্যায় হে জগতের প্রাণ!
আনন্দধারা বহিল যেন ঐ সাহারার প্রতিটি ধূলিমাঝে
স্বাগতম! স্বাগতম! গাহিল সৃষ্টিকুল বরণমালা হাতে।
পুতুলপূজা ত্যাজিয়া ব্যাকুল মানব ধাবিল স্রষ্টাপানে
ধরণী হল মাতোয়ারা আনন্দ, হাসি আর গানে।
যুগে যুগে ছিল বিঘোষিত তব আগমনী বারতা
তব আলোয় আলোকিত জগৎ, গগণে নিযুত তারকা।
আসিছেন আজিকে এ ধূসর ধরাধামে নুর নবী হযরত
কুরআন কহে ’ওরে মূঢ়! তিনি সৃষ্টিকুলের মূর্ত রহমত।

রচনাকাল: ২০০১ ইং (তারিখ বিস্মৃত)